ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দফতর বৃহস্পতিবার বলেছে, সিরিয়ার পক্ষ থেকে কোনও দল নিরাপত্তার নিশ্চয়তা না দেওয়া পর্যন্ত গোলান হাইটস সংলগ্ন সিরীয় বাফার জোনে থাকবে সে দেশের বাহিনী।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে বিদ্রোহীরা ক্ষমতাচ্যুত করার পর ইসরায়েলি সৈন্যরা গোলান হাইটসে তাদের দিক থেকে বাফার জোন ও সিরিয়ার দিকে অগ্রসর হয়েছে।
নেতানিয়াহুর দফতর বলেছে, “শূন্যস্থান পূরণ করতে ও গোলান হাইটসে ইসরায়েলি জনগোষ্ঠীকে ৭ অক্টোবরের কায়দায় হামলার হুমকি দেওয়ার সুযোগ জিহাদি গোষ্ঠীগুলিকে দেবে না ইসরায়েল।”
১৯৭৪ সালের চুক্তির লঙ্ঘন হিসেবে ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমালোচনা করেছে জাতিসংঘ। এই চুক্তিতে ইসরায়েলি ও সিরীয় বাহিনীকে পৃথক করে একটা রেখা টেনে দিয়েছিল এবং দুই দেশের মধ্যে জাতিসংঘের নজরদারিতে একটা বাফার জোনের কথাও বলা হয়েছিল।
ফ্রান্স, ইরান, রাশিয়া, তুরস্ক ও সৌদি আরবও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপকে সমালোচনা করেছে। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, সৈন্য মোতায়েন সাময়িক হওয়া জরুরি।
আসাদকে উৎখাত করেছে যে সিরীয় যোদ্ধারা তাদের প্রধান কমান্ডার বুধবার বলেছেন, আসাদ তার স্বৈরতান্ত্রিক শাসনে যাদের আটক করেছিলেন তাদের ক্ষমা করে দেওয়া হবে। নির্যাতন ও হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করা হবে। ক্ষমার প্রশ্ন নেই।
সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত্ব টিভির টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে আবু মহম্মদ আল-জোলানি বলেছেন, “আমরা সিরিয়াতে তাদের বিচার করব। পলাতকদের আমাদের হাতে তুলে দিতে বিভিন্ন দেশকে অনুরোধ করছি যাতে আমরা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারি।”
জোলানির যোদ্ধারা মহম্মদ আল-বাশিরকে আগামী ১ মার্চ পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনের দায়িত্ব দিয়েছে। বাশির লক্ষ লক্ষ শরণার্থীকে ঘরে ফেরার, ঐক্য গড়ার ও প্রাথমিক পরিষেবাগুলি দেওয়ার কথা বলেছেন।
সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ছোট অংশে বিদ্রোহী-নেতৃত্বাধীন প্রশাসন চালাতেন বাশির। তিনি বলেছেন, “আমাদের বিদেশী মুদ্রা নেই। ঋণ ও বন্ডের বিষয়ে আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি। সেহেতু, হ্যাঁ, আমরা আর্থিকভাবে খুব খারাপ অবস্থায় রয়েছি।”
তবে, বাশির বলেছেন, আসাদকে উৎখাত করা ইসলামপন্থী জোট সকল ধর্মীয় গোষ্ঠীর অধিকারকে নিশ্চয়তা দেবে।
তিনি বলেছেন, “সংক্ষেপে বললে, আমরা ইসলামিক; আমরা সিরিয়ার জনগণ ও সকল সম্প্রদায়ের অধিকারকে নিশ্চিত করব।”
বিদেশী কর্মকর্তারা সতর্কভাবে সাবেক বিদ্রোহীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এই বিদ্রোহীরা আল কায়দার সাবেক শাখা হায়াত তাহরির আল-শামের সঙ্গে যুক্ত। যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অন্যান্য বহু দেশ এই গোষ্ঠীকে এখনও সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে।