বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রথমে লন্ডন এবং পরে তৃতীয় কোনো দেশে নিয়ে যাওয়া হবে।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, "তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে আমরা যত দ্রুত সম্ভব তাকে বিদেশের একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি হাসপাতালে স্থানান্তরের প্রস্তুতি শুরু করেছি।"
তিনি বলেন, "এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আমরা একটি দূরপাল্লার বিশেষায়িত এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করছি এবং প্রয়োজনীয় যোগাযোগ করছি। প্রাথমিকভাবে তাকে (খালেদা জিয়া) বিমানযোগে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হবে, সেখানে সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতির পর তাকে বহুমুখী চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে এমন কোনো দেশে নিয়ে যাওয়া হবে। আমরা আশা করছি শিগগিরই সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে পারব, যাতে ম্যাডাম দ্রুত বিদেশ ভ্রমণ করতে পারেন।"
জাহিদ আরও বলেন, খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে চিকিৎসক, নার্স ও স্বজনদের বিস্তারিত তথ্য ইতোমধ্যে তার কার্যালয় থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস এবং কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।
গত বছরের ২৬ অক্টোবর খালেদা জিয়ার পেট ও বুকে পানি জমে যাওয়া ও লিভারে রক্তক্ষরণ বন্ধে ট্রান্সজুগুলার ইন্ট্রাহেপ্যাটিক পোর্টোসিস্টেমিক শান্ট (টিপস প্রসিডিউর) নামে পরিচিত হেপাটিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন যুক্তরাষ্ট্রের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
২০২১ সালের নভেম্বরে খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে তার চিকিৎসকরা তাকে বিদেশে পাঠানোর পরামর্শ দিয়ে আসছেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫।
২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট তার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তার সাজা হয়।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে সরকার ২০২০ সালের ২৫ মার্চ এক নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে ৭৭৬ দিন পর তাকে সাময়িকভাবে মুক্তি দেয়। তবে শর্ত দেওয়া হয় যে তিনি গুলশানের বাসায় থাকবেন এবং দেশত্যাগ করতে পারবেন না।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের নির্দেশে খালেদা জিয়াকে পুরোপুরি মুক্তি দেওয়া হয়।