পূর্ব–মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর আন্দামান সাগর এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তর–পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপ এবং পরে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’-তে পরিণত হয়ে পূর্ব–মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় (১৬ দশমিক ২ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০ দশমিক শূন্য ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে।
এটি আরও পশ্চিম-উত্তর–পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ঘনীভূত হতে পারে।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে পরের ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে।
এতে আরও বলা হয়েছে, সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রাও সামান্য কমতে পারে।
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ১৬২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত
এদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় শ্যামনগর উপজেলার সরকারি ১০২টিসহ মোট ১৬২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বুধবার সকাল থেকেই সাতক্ষীরার আকাশে মেঘ দেখা যায়। দুপুর ১২টার পরই শুরু হয় বৃষ্টি।
একইসঙ্গে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবনসংলগ্ন গাবুরা, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালিনীসহ উপকূলীয় এ অঞ্চলে বৃষ্টি হচ্ছে।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন বলেন, “বুধবার এ গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে দানা। উপকূলীয় অঞ্চলে ২ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত জারি করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “দানার প্রভাবে সাতক্ষীরা উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় সকালে আকাশ মেঘলা ছিল। এখন বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে বৃষ্টি বাড়তে পারে।”
শ্যামনগর উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. শাহিনুল আলম বলেন, “ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় উপজেলার সরকারি ১০২টিসহ মোট ১৬২টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।”
এ ছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণ শুকনা খাবার মজুদ রাখা হয়েছে। জানমালের নিরাপত্তার জন্য ২ হাজার ৯৮০ জন সিপিপি সদস্য রয়েছে; যার মধ্যে অর্ধেক নারী ও অর্ধেক পুরুষ। এ ছাড়াও পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) শ্যামনগরে কর্মরত এসও প্রিন্স রেজা বলেন, “শ্যামনগরে ৩৬০ কিলোমিটারের মতো বেড়িবাঁধ আছে। এর মধ্যে ছয়-সাতটি পয়েন্ট বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। এ ছাড়া বেশ কিছু এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টে কাজ চলছে।”
এ ছাড়া সাতক্ষীরা পাউবো-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দিন বলেন, “পাউবো-১-এর আওতায় ৩৮০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে তিন কিলোমিটার অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে বড় ধরনের দুর্যোগ না এলে বাঁধ ভাঙার আশঙ্কা নেই।”