হালনাগাদ খসড়া ভোটার তালিকা অনুযায়ী বাংলাদেশে এখন মোট ভোটার ১২ কোটি ৩৬ লাখ ৮৩ হাজার ৫১২ জন।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাজধানী ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সকালে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে হালনাগাদ খসড়া ভোটার তালিকার তথ্য প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের কাছে হালনাগাদ খসড়া ভোটার তালিকার বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
তিনি জানান, মোট ১৮ লাখ ৩৩ হাজার ৩৫২ জন নতুন ভোটার এবারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। এবারের হালনাগাদে ভোটার বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৫০।
হালনাগাদ খসড়া তালিকা অনুযায়ী, এখন দেশে মোট পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৩৩ লাখ ৩০ হাজার ১০৩ জন। নারী ভোটার ৬ কোটি ৩ লাখ ৫২ হাজার ৪১৫ জন। হিজড়া পরিচয়ে ভোটার আছেন ৯৯৪।
নতুন ভোটারদের মধ্যে নারীদের তুলনায় পুরুষ ভোটার বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। নারীর তুলনায় পুরুষ ৫ লাখ ৩৭ হাজার ৭৪২ জন বেশি ভোটার হয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, হালনাগাদ তালিকা নিয়ে কারও কোনো দাবি-আপত্তি থাকলে ১৭ জানুয়ারির মধ্যে এ বিষয়ে আবেদন করা যাবে।
দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তি শেষে আগামী ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন।
এ ছাড়া, ২০ জানুয়ারি থেকে বাড়ি বাড়ি হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হতে পারে।
ভোটার হওয়ার বয়স ১৭ বছর হওয়া উচিত: ড. ইউনূস
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তরুণেরা সংখ্যায় বেশি। দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা আগ্রহী। নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে তার মতামত নেওয়ার জন্য আমি মনে করি ভোটার হওয়ার বয়স ১৭ বছর নির্ধারিত হওয়া উচিত।
২৭ ডিসেম্বর (২০২৪) রাজধানীর ফার্মগেট কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ আয়োজিত দুই দিনব্যাপী জাতীয় সংলাপ-২০২৪ এর উদ্বোধনী ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, “কোন বয়সে একজন নাগরিক ভোটার হতে পারবে, তার জন্য নানা দেশে নানা বয়স নির্ধারণ করা আছে। নির্বাচন সংস্কার কমিশন নিশ্চয়ই এরকম একটা বয়স সুপারিশ করবে। সে বয়স আমার পছন্দ হতেও পারে, না-ও হতে পারে। ধরুন আমি তরুণদের তাড়াতাড়ি ভোটার করার পক্ষে। যে যত তরুণ, পরিবর্তনের প্রতি তার আগ্রহ তত বেশি—এই হলো আমার যুক্তি। তরুণেরা তাকে শক্তি যোগায়। তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে তার গভীর সখ্য তাকে এই শক্তি যোগায়। তরুণেরা সংখ্যায়ও বেশি। দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা আগ্রহী। নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে তার মতামত নেওয়ার জন্য আমি মনে করি ভোটার হওয়ার বয়স ১৭ বছর নির্ধারিত হওয়া উচিত।”
প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের সমালোচনা বিএনপি নেতা ফখরুলের
এদিকে ‘ভোটার হওয়ার বয়স ১৭ বছর হওয়া উচিত’—প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের এমন প্রস্তাবে আপত্তি তুলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টার এমন পরামর্শ বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
২৮ ডিসেম্বর (২০২৪) জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ভোটার হওয়ার ন্যূনতম বয়স ১৭ বছর হওয়া উচিত। এর অর্থ, এখন তাহলে আবার নতুন করে ভোটার তালিকা করতে হবে।”
“আপনি প্রধান উপদেষ্টা, প্রথমেই বলে দিচ্ছেন, ভোটারের বয়স ১৭ হলে ভালো হয়। আপনি যখন বলছেন, তখন নির্বাচন কমিশনের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়। এটা ইলেকশন কমিশনের কাজ, তাদের ওপর ছেড়ে দিন,” যোগ করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার মন্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, “এভাবে না বলে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়টি আনা উচিত ছিল, এটি ভালো হতো। তাহলে কোনো বিতর্কের সৃষ্টি হতো না। মানুষের মনে এখন বেশি করে আশঙ্কা তৈরি হবে, এটা করতে গিয়ে আরও সময় যাবে, কালক্ষেপণ হবে। মানুষের মনে ধারণা তৈরি হচ্ছে, আমার না। তাদের মনে ধারণা সৃষ্টি হচ্ছে, কেন যেন এই সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করছে।”
“(ভোটার হওয়ার ন্যূনতম বয়স) ১৮ বছর তো আছে, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য। যদি কমাতে চান, সেটি ইলেকশন কমিশন প্রস্তাব করুক। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলেন,” যোগ করেন তিনি।