বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামকে রবিবার চোখ বাধা অবস্থায় রবিবার (২১ জুলাই) পাওয়া যায়।
তাঁর সাথে যোগাযোগ করা হলে ভয়েস অফ আমেরিকাকে তিনি রবিবার অভিযোগ করেন গত পরশু রাতে রাষ্ট্রীয় কোন এক বাহিনী তাঁকে তুলে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, "আমাকে নেওয়ার পরে আমার হাত ও পায়ে আঘাত করা হয়। সেখানে এখনও রক্ত জমাট (বেঁধে) আছে।" এখন তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানান ।
তিনি আরও বলেন, "আমাকে নির্যাতন করার পরে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। আজ সকালে পুর্বাচল- আশুলিয়া এলাকায় একটি ব্রিজের পাশে নিজেকে আবিষ্কার করি।"
ভয়েস অফ আমেরিকাকে তিনি জানান, তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি নিজে দেখতে পাননি। তবে পরে যেই এলাকা থেকে তাঁকে তুলে নেয়া হয়, সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে তিনি শুনেছেন সেখানে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির গাড়ি দাঁড় করানো ছিল। তাঁকে তুলে নেওয়ার পর যে বাড়িতে তিনি অবস্থান করছিলেন সেই বাড়িটি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর 'তত্ত্বাবধানে' ছিল বলেও দাবী করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, "...জিজ্ঞাসাবাদ খুব বেশিদূর এগোয়নি। আমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে...আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।"
এর আগে শনিবার (২০ জুলাই) তাঁর বাবা বদরুল ইসলাম ভয়েস অফ আমেরিকাকে জানান, শনিবার রাত আড়াইটার দিকে বন্ধুর বাসা থেকে ডিবি পুলিশ (তাদের অনুমান) নাহিদ ইসলামকে তুলে নিয়ে যায়।
তিনি সেসময় আরও বলেন, "আমরা... (শনিবার) সকালে ডিবি কার্যালয়ে গিয়েছিলাম, তারা আমাদের জানিয়েছে ডিবি তাকে তুলে নেয়নি।" ডিবি কার্যালয়ে কোন সহযোগিতা পাননি বলে অভিযোগ করেছেন বদরুল ইসলাম। তিনি বলেন, "এখন পর্যন্ত আমরা ছেলের কোন খোঁজ পাচ্ছি না।"
বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট রবিবার সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে হাইকোর্টের রায় বাতিল করে সরকারি চাকরিতে ৯৩ শতাংশ নিয়োগ মেধার ভিত্তিতে করার নির্দেশ দিয়েছে।
পাঁচ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা, এক শতাংশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী আর এক শতাংশ প্রতিবন্ধী এবং তৃতীয় লিঙ্গদের জন্য সংরক্ষণ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
তবে আন্দোলনকারী ছাত্ররা জাতীয় সংসদে আইন পাস করার দাবী জানিয়েছে।
গত কয়েকদিনে ব্যাপক সহিংসতায় ১০০’র বেশি মানুষ মারা যাবার পর বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য শুক্রবার রাত থেকে দেশব্যাপী সেনা বাহিনী মোতায়েন করা হয়।।
ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন শহরে সান্ধ্য আইন বলবত আছে এবং সোমবারও সরকারি ছুটি থাকবে।
(এই প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন আদিত্য রিমন।)