অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

‘খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি না দিলে পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে’, সমাবেশে মির্জা ফখরুল


বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দ্রুত নিঃশর্ত মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দ্রুত নিঃশর্ত মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দ্রুত নিঃশর্ত মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার (২৯ জুন) রাজধানী ঢাকার নয়া পল্টনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে তিনি এ আহবান জানান।

মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, অবিলম্বে, কোনো শর্ত ছাড়া, আমাদের নেত্রীকে মুক্তি দিন। অন্যথায়, যেকোনো পরিণতির জন্য আপনাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।”

বাংলাদেশের জনগণ খালেদা জিয়াকে আর কারাগারে থাকতে দেবে না বলে উল্লেখ করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, “বর্তমান লুটেরা সরকারের হাতে দেশ নিরাপদ নয়। তাই, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরাতে রাজপথে নামতে হবে।”

আওয়ামী লীগের শাসন থেকে দেশকে রক্ষা করতে এবং মানুষের হারানো অধিকার ফিরিয়ে আনতে বিএনপি আন্দোলন জোরদার করবে বলে জানান মির্জা ফখরুল। আরো বলেন, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে খালেদা জিয়াসহ বিএনপির অনেক নেতাকে কারাগারে পাঠিয়েছে সরকার।

বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের ভূমিকার কথা স্মরণ করেন মির্জা ফখরুল। “খালেদা জিয়া ও দেশের গণতন্ত্রকে আলাদা করার কোনো সুযোগ নেই;” বলেন তিনি।

গত বছরের ২৮ অক্টোবরের সমাবেশ এবং এর পরের আট মাসের মধ্যে এটিই বিএনপি আয়োজিত প্রথম বড় সমাবেশ। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।

মির্জা আব্বাস বলেন, গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের অনুপস্থিতিতে দেশ এখন চোর ও লুটেরাদের দ্বারা পরিপূর্ণ। এ অবস্থায় খালেদা জিয়াকে বিনা শর্তে কারাগার থেকে মুক্ত করতে এবং দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দৃঢ় সংকল্প নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের রাজপথে নামতে হবে।

“খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি না দেয়া পর্যন্ত, বিএনপির আন্দোলন চলবে, কারণ বিএনপি বিশ্বাস করে তাকে ছাড়া গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে না;” মির্জা আব্বাস যোগ করেন।

উল্লেখ্য, রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে গত বুধবার সারাদেশে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

গত ২২ জুন দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে গুলশানের বাসায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে খালেদা জিয়াকে অ্যাম্বুলেন্সে করে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পরদিন অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি দল সফলভাবে তার বুকে পেসমেকার স্থাপন করে। খালেদা জিয়া এখন হাসপাতালের সিসিইউ সুবিধাসহ একটি কেবিনে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

২০২২ সালের ১১ জুন খালেদা জিয়ার হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। ৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যা-সহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।

২০২০ সালে শর্তসাপেক্ষে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ডের অধীনে বেশ কয়েকবার চিকিৎসা নিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। পরে সেই বছরই আরেকটি দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন তিনি।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে সরকার ২০২০ সালের ২৫ মার্চ এক নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে তার গুলশানের বাসায় অবস্থান এবং দেশত্যাগ না করার শর্তে সাময়িক মুক্তি দেয়। এরপর তার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে একাধিকবার।

২০২১ সালের নভেম্বরে খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে তার চিকিৎসকরা তাকে বিদেশে পাঠানোর পরামর্শ দিচ্ছেন।

গত বছরের ২৬ অক্টোবর খালেদা জিয়ার পেটে ও বুকে পানি জমা ও লিভারে রক্তক্ষরণ বন্ধে ট্রান্সজুগুলার ইন্ট্রাহেপ্যাটিক পোর্টোসিস্টেমিক শান্ট (টিপস প্রসিডিউর) নামে পরিচিত হেপাটিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন যুক্তরাষ্ট্রের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।

XS
SM
MD
LG