বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ ট্র্যাজেডি রানা প্লাজা ধস।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) ছিল রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১তম বার্ষিকী।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রাজধানী ঢাকার অদূরে সাভারে ধসে পড়ে রানা প্লাজা নামে আটতলা ভবন। এই ঘটনায় ১ হাজার ১৩৮ জন নিহত ও ২ হাজারের বেশি মানুষ আহত হন।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার বাসস্ট্যান্ডের পাশে অবস্থিত রানা প্লাজা। ভবনটিতে ছিল ৩টি পোশাক কারখানা। শ্রমিকেরা প্রতিদিনের মতো ওই দিন সকালে কর্মস্থলে হাজির হয়েছিলেন। কাজও শুরু করেছিলেন নির্ধারিত সময়ে। সাড়ে ৯টার দিকে এক বিকট শব্দে ধসে পড়ে ভবনটি।
মর্মান্তিক এ ঘটনায় সাভার থানার তৎকালীন এসআই ওয়ালী আশরাফ বাদী হয়ে মালিকসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ভবন নির্মাণে অবহেলার অভিযোগ এনে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন।
ভবনের মালিক সোহেল রানা গ্রেপ্তারের পর থেকেই জেলে আছেন।
২০১৫ সালের ১ জুন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সহকারী পুলিশ সুপার বিজয়কৃষ্ণ কর ভবন মালিক সোহেল রানাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এ মামলায় মোট ৫৯৪ জনকে সাক্ষী করা হয়।
২০১৬ সালের ১৮ জুলাই ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম কুদ্দুস জামান অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
কিন্তু এই আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অধিকাংশ অভিযুক্ত উচ্চ আদালতে আপিল করায় তা আটকে যায়।
এই আপিল নিষ্পত্তি শেষে ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক এ এইচ এম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া মামলার বাদী সাভার থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) ওয়ালী আশরাফের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, রানা প্লাজা সারভাইভারস অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন, শ্রমিক সংগঠন ও বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো সাধারণত ট্র্যাজেডিতে নিহতদের স্মরণে প্রতি বছর বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে থাকে।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় মোমবাতি প্রজ্বালনের মাধ্যমে রানা প্লাজা ট্রাজেডিতে নিহত শ্রমিকদের স্মরণ করেন তাদের স্বজন ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। রানা প্লাজার সামনে অস্থায়ী বেদিতে মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচি ও নিহতদের স্বরণে কিছু সময় নীরবতা পালন করা হয়। পরে নিহত শ্রমিকদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।