জাতীয় পার্টিতে দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের এবং প্রধান পৃষ্টপোষক রওশন এরশাদের দ্বন্দ্ব নতুন মোড় নিয়েছে। রবিবার (২৮ জানুয়ারী) রওশন এরশাদ নিজেকে চেয়ারম্যান ‘ঘোষণা করেন’ এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী মামুনুর রশীদকে দলের মহাসচিব ‘নিযুক্ত করেন’।
তবে যখন রওশন এরশাদ দলের চেয়ারম্যানকে তাঁর পদ থেকে ‘অব্যাহতি’ দিচ্ছিলেন, একই দিন জাতীয় সংসদের এক প্রজ্ঞাপনে জি এম কাদেরকে সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। দলের চেয়ারম্যানের পদ থেকে তাঁর ‘অব্যাহতি’ নিয়ে জি এম কাদেরের কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় নি।
বার্তা সংস্থা ইউএনবির খবর অনুযায়ী, রওশন এরশাদ জানিয়েছেন, দলের গঠনতন্ত্রের ২০-১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী চলমান সংকট উত্তরণের লক্ষ্যে দলের নেতা-কর্মীদের অনুরোধে জিএম কাদেরকে চেয়ারম্যান পদ থেকে এবং মুজিবুল হক চুন্নুকে সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
তবে মুজিবুল হক চুন্নু এরশাদের এই ঘোষণাকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
‘’আমরা বিষয়টি বিবেচনায় নিচ্ছি না। এর কোনো ভিত্তি নেই। সংবিধানে তার (রওশন) সেই ক্ষমতা নেই,’’ চুন্নুকে উদ্ধৃত করে ইউএনবি জানায়।
“রওশন এর আগে তিনবার জিএম কাদেরকে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং পরে তার ঘোষণা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন,” জানান চুন্নু।
তবে রওশন এরশাদ দাবী করেছেন তিনি দলের নেতাকর্মীদের অনূরোধে পদক্ষেপটি নিয়েছেন, জানাচ্ছে ইউএনবি।
জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্ত্রী রওশন জানান, সম্প্রতি দল থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন বা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন, দলের এমন নেতাদের সঙ্গে গুলশানে নিজ বাসভবনে মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেন রওশন।
রওশন এরশাদ বলেন, জিএম কাদের ও মুজিবুল হক চুন্নু দলের মারাত্মক ক্ষতি করেছেন। তবে দলের আর যেন কোনো ক্ষতি না হয়, সে কারণেই তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছেন।
'ষড়যন্ত্রের শিকার'
রওশন এরশাদের এই ঘোষণার সপ্তাহখানেক আগে জি এম কাদের অভিযোগ করেছিলেন, জাতীয় পার্টি দীর্ঘদিন ধরে ‘’নানা ষড়যন্ত্রের শিকার।‘’
শনিবার (২০ জানুয়ারি) রংপুরে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ১৯৯০ সালে ‘’ক্ষমতা ছাড়ার পর থেকে বিভিন্ন সময় নানা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে জাতীয় পার্টি।‘’
ঘটনাপপ্রবাহ এরকম একটা মোড় যে নিয়ে পারে, তার একটা আভাস কিছু দিন আগেই পাওয়া যাচ্ছিল।
সোমবার ২২ জানুয়ারী রওশন এরশাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে অভিযোগ করেন যে, তাঁর ভাষায়, জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা ‘’নানাভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।‘’
বিবৃতিতে তিনি অভিযোগ করেন যে, দলের প্রতিষ্ঠাতা এইচ এম এরশাদের অনেক ‘’অনুসারীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে, যা দলকে দুর্বল করেছে।‘’