ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্য অসমের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন উলফা (ইউনাইটেড লিরারেশন ফ্রন্ট অফ অসম)-র আলোচনাপন্থীদের সঙ্গে ভারতের কেন্দ্র সরকারের শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হল শুক্রবার ২৯ ডিসেম্বর।
রাজধানী দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার উপস্থিতিতে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। উলফা-র তরফে হাজির ছিলেন অরবিন্দ রাজখাওয়া ও তার অনুগামীরা।
উলফা-র শীর্ষ নেতা পরেশ বরুয়া এই আলোচনায় অংশ নেননি। চুক্তির খসড়া তিনি আগেই খারিজ করেছিলেন। ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের এক গোপন স্থানে বাস করেন পরেশ।
পরেশ বরুয়া অনুপস্থিত থাকার ফলে শুক্রবারের চুক্তির বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় থাকছে। যদিও চুক্তি স্বাক্ষরের পর জঙ্গি সংগঠন ও কেন্দ্র দু’পক্ষই শান্তি ফিরবে বলে আশা প্রকাশ করেছে।
উত্তর-পূর্বের আরেক রাজ্য মণিপুরে দুই জনজাতি গোষ্ঠী কুকি ও মেইতেইদের মধ্যে জাতিদাঙ্গায় রক্তক্ষয় আপাতত বন্ধ হলেও দু’পক্ষের মধ্যে সামনাসামনি আলোচনার পরিস্থিতি নেই।
এক পক্ষ আর এক পক্ষের এলাকায় যেতে পারছে না। কুকিরা ইতিমধ্যেই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দাবি করেছে। কুকিদের দুটি সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ফোরাম এবং কুকি ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে।
মণিপুরের চলমান জাতিদাঙ্গার সংকটের মধ্যেই অসম নিয়ে শান্তিচুক্তি হল। এই চুক্তি অনুযায়ী অসমের আদি বাসিন্দাদের জমির অধিকার নিশ্চিত করা হবে।
১৯৭৯ সালে তৈরি সংগঠন উলফা পৃথক অসমের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। দাবি আদায়ে জঙ্গি কার্যকলাপের আশ্রয় নেয় তারা। উলফা-র আক্রমণে প্রাণ যায় বহু মানুষের। নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় এই সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে তৎকালীন ভারত সরকার। সেই নিষেধাজ্ঞা পরবর্তী সময়ে প্রত্যাহার হয়নি।
পাশাপাশি ভারত ও ভুটানের সেনা একই সঙ্গে উলফা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অপারেশন অভিযান চালাতে থাকে। তারপর উলফা-র একাংশ আত্মসমর্পণ করে। আত্মসমর্পণের পর চলতে থাকে দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলন। শুক্রবার যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে তার জন্য গত ১২ বছর ধরে দফায় দফায় আলোচনা চলেছে।