ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ২০০৮ সালে সাংবাদিক সৌম্যা বিশ্বনাথন হত্যায় দোষী সাব্যস্ত চার জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে দিল্লি সাকেত আদালত।
আদালতের ব্যাখ্যা, এই মামলাটি বিরলের মধ্যে বিরলতম নয়, তাই দোষীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া সম্ভব হল না।
মামলার পঞ্চম দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তি শাস্তির মেয়াদ ইতিমধ্যেই পূর্ণ করে ফেলেছেন।
দিল্লি আদালত রায়দানের সময় জানিয়েছে, ”এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে, সৌম্যার মতো কমবয়সি ও কঠোর পরিশ্রমী এক সাংবাদিককে তার প্রাণ হারাতে হয়েছে।
''ভারতে মহিলাদের বাইরে বেরিয়ে কাজের আগ্রহ কমছে, এর কারণই হল মহিলারা তাদের কাজের জায়গায় ও বাইরে নানাভাবে নিগ্রহের শিকার,” আদালতের রায়ে বলা হয়।
পঁচিশ বছর বয়সী টেলিভিশন সাংবাদিক সৌম্যা বিশ্বনাথন ২০০৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর কাজ থেকে ফেরার পথে ভারতীয় সময় রাত ৩টায় দিল্লির বসন্ত কুঞ্জের কাছে খুন হয়েছিলেন। একটি গাড়ির ভিতর থেকে তার দেহ উদ্ধার হয়।
জিগীষা ঘোষ তদন্তে প্রমাণ
পুলিশ জানিয়েছিল, সৌম্যার মাথা ফুঁড়ে দিয়েছিল গুলি। এরপরে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মী জিগীষা ঘোষের মৃত্যুর তদন্তে নেমে, সৌম্যার খুনের বিষয়ে নির্দিষ্ট কিছু তথ্যপ্রমাণ খুঁজে পায় পুলিশ।
জিগীষা ঘোষের হত্যায় অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, তারা সৌম্যার খুনের সঙ্গেও যুক্ত। দিল্লি পুলিশ ২০০৯ সালে পেশ করা ৬২০ পাতার চার্জশিটে জানায় যে, ডাকাতি এবং লুটপাটের জন্যই সৌম্যাকে খুন করা হয়।
হাতের ট্যাটু এবং পুলিশের চুরি যাওয়া ওয়্যারলেস সেটই ধরিয়ে দিয়েছিল দিল্লির সাংবাদিক সৌম্যা এবং তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী জিগীষার খুনিদের।
তার পরই দিল্লি পুলিশের তৎকালীন ডেপুটি কমিশনার (দক্ষিণ) এইচজিএস ঢালিওয়াল, এসিপি ভীম সিংয়ের নেতৃত্বে সেই খুনের তদন্তের জন্য একটি দল গঠন করেন।
একে একে ধরা পড়ে অভিযুক্তরা।
সাংবাদিক সৌম্যা বিশ্বনাথন হত্যায় অভিযুক্ত রবি, অমিত, বলজিৎ, অজয় কুমার এবং অজয় শেট্টিকে দোষী সাব্যস্ত করে দিল্লির নিম্ন আদালত।
এদের মধ্যে রবি, অমিত, বলবীর ও অজয় কুমারকে দুটি ভিন্ন খাতে ভারতীয় মুদ্রায় ২৫ হাজার ও ১ লক্ষ করে জরিমানা করা হয়েছে।
পঞ্চম অপরাধী অজয় শেঠিকে ভারতীয় মুদ্রায় ৭.৫ লক্ষ জরিমানা করেছে আদালত। এই অর্থের ভারতীয় মুদ্রায় ৭.২ লক্ষ দেওয়া হবে নিহত সৌম্যার পরিবারকে।