শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, শুক্রবার একটি ইসলামিক স্টেট আফগান সহযোগী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আমেরিকান বিমান হামলার ফলে ঐ গ্রুপের দুজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য নিহত হয়েছে।
শনিবার সংবাদ সম্মেলনে এই গ্রুপের বিকল্প পদবি ব্যবহার করে পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কার্বি যুক্তরাষ্ট্রের হামলার ফলে কতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আইসিস তা বিস্তারিত না বললেও তিনি বলেন, " আইসিস ‘এর দু’জন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি যারা আমাদের লক্ষ্য ছিল তারা নিহত হয়েছে এবং একজন আহত হয়েছে। বেসামরিক কেউ হতাহত হয়নি বলে আমরা জানি।"
জন কার্বি বলেন, "তারা একজন পরিকল্পনাকারীকে হারিয়েছে এবং একজন সহায়ককে হারিয়েছে। অপর একজন আহত হয়েছে। সত্য যে ঘটনা যে এই দু'জন ব্যক্তি এখন আর পৃথিবীতে হাঁটছে না - এটি একটি ভাল খবর।"
কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে মারাত্মক বিস্ফোরণের ৪৮ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী শুক্রবার ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠীর আফগান সহযোগী ইসলামিক স্টেট খোরাসান বা আইএসআইএস-কে নামে পরিচিত গোষ্ঠীর ওপর পাল্টা ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এমন এক ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে যুক্তরাষ্ট্র এ হামলা চালিয়েছে যাকে সেনাবাহিনী কাবুল হামলার পরিকল্পনাকারী মনে করে।
এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় কমান্ডের মুখপাত্র ক্যাপ্টেন বিল আরবান বলেছেন, "আফগানিস্তানের নানগারহার প্রদেশে মানুষবিহীন বিমান হামলা করা হয়েছে।প্রাথমিকভাবে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে আমরা ঐ ব্যক্তিকে হত্যা করতে পেরেছি।আমরা জানি কোন বেসামরিক লোকজন হতাহত হয়নি।" কাবুলের বিমানবন্দরে হামলার পরিকল্পনার সঙ্গে ঐ ব্যক্তি জড়িত ছিল কিনা তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট হয়নি।
আইসিস-কে বৃহস্পতিবার কাবুলের বিমানবন্দরের বাইরে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে। ঐ ঘটনায় কমপক্ষে ১৭০ জন আফগান এবং ১৩ জন আমেরিকান সেনা সদস্য নিহত হয়েছে।
পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে জানানো হয় শুক্রবার আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস নিরাপত্তা হুমকির কথা জানিয়ে আমেরিকান নাগরিকদের কাবুল বিমানবন্দর থেকে দূরে থাকতে অনুরোধ করে এবং বিমানবন্দরের চারটি গেটের যেকোনো একটির কাছে থাকলে অবিলম্বে ঐ স্থান ত্যাগ করার আহ্বান জানায়।
শুক্রবার হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেন, যে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা মনে করছেন কাবুলে আরেকটি সন্ত্রাসী হামলার আশংকা রয়েছে।
পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কার্বি শুক্রবার এক ব্রিফিংয়ে বলেন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে যে বিমানবন্দরের ওপর অন্যান্য "নির্দিষ্ট, বিশ্বাসযোগ্য" হুমকি রয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা অবশ্যই প্রস্তুত আছি এবং ভবিষ্যতেও হামলা হতে পারে।"
নিরাপত্তার এই হুমকি আমেরিকান এবং কিছু আফগানদের সরিয়ে নেওয়াকে আরও কঠিন করে তুলেছে।হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন কর্মকর্তা ভিওএকে জানান, " এই মূহুর্তে এসআইভি [বিশেষ অভিবাসী ভিসাধারীদের] সরিয়ে নেয়ার কোন সমন্বিত প্রচেষ্টা দেখা যাচ্ছে না।" কিন্তু পররাষ্ট্র দপ্তর এখনও স্থানীয় দূতাবাসের কর্মী, আমেরিকান নাগরিক এবং আইনত যারা স্থায়ী বাসিন্দা তাদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।