গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক এফবিআই পরিচালক জেমস কোমির বরখাস্তের বিষয় নিয়ে নানা তর্ক বিতর্ক চললেও হোয়াইট হাউজ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে সমুন্নত রাখছে। টুইটারে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কয়েক দফা বার্তা ছেড়েছেন বিষয়টি ঘিরে। বলেছেন ডেমোক্রেট রাজনীতিকরা গত বছরের নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ, রাশিয়ার সঙ্গে তার প্রচারণা দলের যোগাযোগ এসব নিয়ে গল্প বানিয়ে সাজানো অভিযোগ তদন্তের ভার দিয়েছিল এফবিআইয়ের কাছে; কংগ্রেসে।
হোয়াইট হাউজে সেনাবাহিনীর সদস্যদের সম্মান জানানোর এক অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট ও ফার্ষ্ট লেডী সেনা পরিবারের সদস্যদেরকে স্বাগত জানান। ওই অনুষ্ঠানেও বিষয়টি নিয়ে প্রেসিডেন্ট একই কথা বলেন।
এর আগে এনবিসিতে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন হোয়াইট হাউজের এক অনুষ্ঠানে কোমি তাঁকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে ওই তদন্তের মধ্যে তিনি নেই। তবে নিউইয়র্ক টাইমসের খবর অনুযায়ী জেমস কোমি প্রেসিডেন্টের প্রতি তার দেয়া অঙ্গীকার অনুসারে কতোটা বিশ্বস্ত বা অনুগত তা যাচাই করতে গিয়ে এফবিআই পরিচালক পূর্ন আনুগত্য না দেখানোয় তাকে বরখাস্ত করা হয়।
ওই বিষয়টিকেই প্রেসিডেন্ট টুইট বার্তায় কোমিকে উদ্দেশ্য করে বলেন আশা করি ওই কথোপকথন রেকর্ড হয়নি।
আর সেই টুইটের সূত্র ধরে প্রশ্ন ওঠে হোয়াইট হাউজের সেই অনুষ্ঠানের কথাবার্তা কি রেকর্ড করা হয়েছিল? হোয়াইট হাউজ মুখপাত্র শন স্পাইসারকে সাংবাদিকরা এ প্রশ্ন করলে তিনি বলেন তিনি জানেন না।
“আমি এ নিয়ে প্রেসিডেন্টর সঙ্গে কথা বলেছি এবং প্রেসিডেন্ট বলেছেন এ নিয়ে তাঁর নতুন করে কিছু বলবার নেই”।
কংগ্রেশনাল ডেমোক্রেটরা হোয়াইট হাউজে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন বিষয়টি সম্পর্কে আরো তথ্য জানাতে। জেমস কোমিকে বরখাস্ত করবার কয়েকদিন পর নানা আলোচনা সমালোচনা শুরু হলে বৃহস্পতিবার এ নিয়ে করা এক মন্তব্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন এফবিআইকে তিনি বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছেন।
“তিনি চালাকি করে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছিলেন। এফবিআইয়ে বিশৃংখল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এটা আপনার আমার সকলেরই জানা”।
জেমস কোমির স্থলে ভারপ্রাপ্তে এফবিআই পরিচালক করা হয়েছে এ্যান্ড্রিউ ম্যাককেবিকে। বৃহস্পতিবার সেনেট শুনানীতে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প প্রচারণা দলের সঙ্গে রাশিয়ার যোগাযোগ বিষয়টির তদন্ত ঠিকমতোই চলবে।
“এফবিআইয়ে কর্মরত নারী পুরুষ যারা আমেরিকানদের এবং এই দেশের সংবিধানকে সমুন্নত রাখার অঙ্গীকার করেছেন তাদের কাজ কেউ থামিয়ে রাখতে পারবেন না”।
কোমির বরখাস্ত হওয়ার খবর প্রচার হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে তার প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়। পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে বলে মন্তব্য করেন এ্যামেরিকান ইউনিভার্সটির অধ্যাপক ক্রিস এডেলসন, “ডনাল্ড ট্রাম্প এই তদন্ত বন্ধ করতে চাচ্ছেন এমনই মনে হচ্ছে। এটা অবিশ্যাস্য একটি ব্যাপার। একটি গুরুত্বপূর্ন তদন্তে হস্তক্ষেপ করাটা সত্যিই চিন্তায় ফেলে দেয়ার মতো একটি ব্যাপার”।
কোমির বরখাস্ত হওয়ার ঘটনা বিশ্লেষণ করেছেন বিশ্বব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা জিয়াউদ্দন চৌধুরী এবং নিউইয়র্ক বসবাসরত বাংলাদেশের সিনিয়র সাংবাদিক ও কবি ড মাহবুব হাসান।