প্রায় ছয় মাস ধরে সাগরে একটি নৌকোতে আটকে থাকার পর ৩০০ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সোমবার স্থানীয় জেলেরা উদ্ধার করে। ইন্দোনেশিয়ার কর্মকর্তারা জানান ঐ অঞ্চলের কর্তৃপক্ষ এই শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে বার বার অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ৩০০ শরণার্থীর মধ্যে থেকে ৩০জন নৌকোতেই মারা যায়।
আচেহ প্রদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লোকসেউমাওয়ীর সরকারের জনসংযোগ প্রধান ও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তত্ত্বাবধানকারী বিষয়ক মুখপাত্র মারযুকি ভয়েস অফ আমেরিকার ইন্দোনেশিয়া বিভাগকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মঙ্গলবার শরণার্থী শিবিরে একজন রোহিঙ্গা নারী মারা যাওয়ার কথা জানান। তিনি বলেন,
“মঙ্গলবার সকালে ঐ নারীকে কাটমেউটিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে জানাজা শেষে লোকসেউমাওয়ীর কুতাব্লাং কবরস্তানে তাকে দাফন করা হয়। আরও চারজন রোহিঙ্গাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। অন্যান্যরা শরণার্থী শিবিরে আছেন, সুস্থ আছেন।“
এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইন্দোনেশিয়ার নির্বাহী পরিচালক উসমান হামিদ বলেন, তারা প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোকে চিঠি লিখে আচেহতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবস্থা সম্পর্কে তাদের গভীর উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন এই রোহিঙ্গারা অনেক দীর্ঘ ও দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে এসেছে। তাদের বেশির ভাগই সাগরে আবহাওয়া, বিশুদ্ধ পানি এবং খাদ্যের অভাবে এখন নানা রোগে ভুগছেন।
“আমরা আশা করছি পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মাসুরদি, অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তা যেমন রাজনৈতিক, আইন ও নিরাপত্তা সমন্বয়ক মন্ত্রী, আইন ও মানবাধিকার মন্ত্রী এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী এই বিষয়ে গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
ইউএনএইচসিআর-এর মুখপাত্র বাবর বালুচ এই বিষয়ে ইউএনএইচসিআর-এর টুইটারে বলেন, "জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর সোমবার সকালে ইন্দোনেশিয়ার আচেহ-এর উত্তর উপকূলে প্রায় ৩০০ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবন রক্ষার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছে। এই রোহিঙ্গা শরণার্থীরা প্রতিকূল অবস্থায় সমুদ্রে সাত মাস ধরে বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করেছে।
এর আগে, করোনা মহামারীর কারণে আরোপিত নিষেধাজ্ঞার জন্য মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড কর্তৃপক্ষ এই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রবেশে বাধা দেয়।
সোমবার উদ্ধার হওয়া প্রায় ৩০০ শরণার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং আশ্রয় প্রদানের জন্য ইন্দোনেশিয়া সরকার জাতিসংঘের সঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।