রোবোটিক হাতের লক্ষ্যই হচ্ছে নোংরা, এবং বিপজ্জনক কাজগুলি করতে মানুষকে সাহায্য করা যা হচ্ছে স্বয়ংক্রিয়তার এমন এক ধরণের উদাহরণ যা মানুষের মানবজাতির উপকারে আসছে। এ বিষয়ে ভিওএর সংবাদদাতা জুলি তাবোহর প্রতিবেদন থেকে জয়তী দাশগুপ্ত জানাচ্ছেন যে, রোবোটিক হাত নতুন কিছু নয়।তবে এই হাত উৎপাদনকারী শেডো রোবট কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিচ ওয়াকার জানিয়েছেন যে, ২০ বছর ধরে তারা মানুষের হাতের মতো কাজ করা এই রোবোটিক হাতটিকে আরও উন্নত করে তোলার চেষ্টা করছেন এবং এটি একটু আলাদা।
শেডো রোবট কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিচ ওয়াকার স্কাইপের মাধ্যমে ভিওএর সাথে কথা বলে জানিয়েছেন যে, “আপনি গ্রিপার অর্থাৎ আঁকড়ে ধরা কোন যন্ত্রের মতো অথবা একটি পশুর থাবার মতো জিনিষ দিয়ে কাজ করছে এরকম রোবট পেতে পারেন, তবে এইভাবে কাজ করা বেশ শক্ত। সুতরাং, আমরা ভেবেছিলাম একটি মানুষের মতো হাত তৈরি করব যার সাহায্যে মানুষের জীবনকে সহজ করে তোলা রোবটের পক্ষেও অনেক সহজ হবে। ”
ওয়াকার বলেন, "ডেক্সট্রাস হ্যান্ড" এর ধারণাটি বলা হয়, মানুষকে অপ্রীতিকর কাজ থেকে মুক্ত করা। রিচ ওয়াকার আরও বলেন, “একটি কাজ বিপজ্জনক হতে পারে, এটি নোংরা কাজ হতে পারে; অবস্থানের কারণে এটি শারীরিকভাবে করা খুব সহজ কাজ নাও হতে পারে, তবে আপনি যদি সেখানে আমাদের এই রোবোটিক হাত ব্যবহার করেন, তবে এটিকে নিয়ন্ত্রণ করে আপনি কাজটি সহজেই সম্পাদন করতে পারবেন।" ২০১৯ সালে দূরবর্তী অবস্থান থেকে রোবটটির কাজ করানো এবং দস্তানার সাহায্যে এটি নিয়ন্ত্রণ করানো শুরু হয় ।
শ্যাডো রোবট সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর রিচ ওয়াকার আরও বলেন, “আপনি দস্তানা পরে রোবটটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। সুতরাং আপনি যখন আপনার হাত নাড়াচ্ছেন, রোবট হাতটিও ঠিক তাই করছে। আপনি তৎক্ষণাৎ দেখতে পাচ্ছেন আপনি কি করছেন। সুতরাং কেউ বলতে পারে, 'আমি ওষুধ তৈরির কারখানায় কাজ করি এবং আমি এটি ব্যবহার করতে চাই যাতে আমরা পণ্যগুলিকে দূষিত না করি', অথবা কেউ বলতে পারে, 'আমি পারমাণবিক প্রকৌশল ক্ষেত্রে কাজ করি, এবং আমরা এটি ব্যবহার করতে পারি যাতে আমরা শরীরের উপর পারমাণবিক বিকিরণের ঝুঁকি এড়াতে সক্ষম হই।”
এমন কিছু দস্তানা আছে যেগুলির সাহায্যে স্পর্শের অনুভূতি পাওয়া যায়। একে ‘হ্যাপটিকস’ বলা হয় এবং রোবট যখন কোনও কিছু স্পর্শ করে, তখন এটি আপনার আঙুলের সাহায্যে অনুভব করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, মানুষ এই ধরণের স্বয়ংক্রিয়তা গ্রহণ করছে, তাতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই।ভার্জিনিয়ার আর্লিংটনে কনজিউমার টেকনোলজি অ্যাসোসিয়েশনের গবেষণা বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট স্টিভ কোয়েনিগ বলেন, “সত্যি কথা বলতে গেলে, যে কাজে ঝুঁকি রয়েছে অর্থাৎ নিরাপদ নয় এরকম চাকরী কে চায়? সত্যিই নোংরা যে কাজ, সে কাজ কি কেউ করতে চায়? আমি বলব, সম্ভবতঃ কেউই এরকম কাজ করতে চাইবে না।"
স্টিভ কোয়েনিগ স্কাইপের মাধ্যমে ভিওএর সাথে কথা বলে জানিয়েছেন যে, ভবিষ্যতে মানুষের আরও বেশী করে মানুষ-মেশিন উভয়েই অংশীদারিত্ব নিয়ে কাজ করতে পারবে এরকম আশা করা উচিত। স্টিভ কোয়েনিগ বলেন, “এইভাবে কাজ করলে অনেক জীবন বাঁচাতে এটি সহায়তা করবে। এটি আমাদের অভিজ্ঞতাগুলিকে উন্নত করবে এবং আমরা যাতে আরও গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলি করতে পারি তার জন্য আমাদের অবসর করে দেবে। এই প্রয়োজন গুলি ব্যবহারের ক্ষেত্রে দিনে দিনে আরও উদ্ভূত হচ্ছে, এবং ভবিষ্যতে আরও বেশী করে এগুলি দেখা যাবে।”