যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালিতে অবস্থিত প্রযুক্তি সংস্থাগুলি সামাজিক দূরত্ব রাখার সতর্কতা ব্যবস্থা অবলম্বন করে কাজকর্ম করার জন্য প্রযুক্তির সাহায্য নিচ্ছেন। মহামারী চলাকালীন নিজেদের কর্মক্ষেত্র খোলা রেখে কাজকর্ম যাতে স্বাভাবিকভাবে করা যায়, তার জন্য সিলিকন ভ্যালিতে অবস্থিত এই প্রকৌশলী সংস্থাটি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সতর্কতা ব্যবস্থা নিয়েছে এবং শ্রমিকদের জন্য এয়ার ফিল্টার সহ হেলমেট তৈরি করে ব্যক্তিগত সুরক্ষা দিচ্ছেন।এ বিষয়ে ভিওএর সংবাদদাতা ম্যাট ডিবলের প্রতিবেদন থেকে জয়তী দাশগুপ্ত জানাচ্ছেন যে, মহামারী শুরু হওয়ার পর থেকেই এই সব সংস্থাগুলি কভিড ১৯ কে কর্মক্ষেত্র থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে প্রতিনিয়ত লড়াই করে চলেছে।
প্রযুক্তি সংস্থা সেগুরোর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জিওনি বিয়ানচিনি বলেন, "২০২০ সালে মে মাসের প্রথমদিকে আমাদের অফিসে দুজন কভিডে আক্রান্ত হয়েছিল,এবং আমাদের সবাইকে বাড়িতে যেতে বলা হয়েছিল।" সামরিক বাহিনী,চিকিৎসা ক্ষেত্র এবং অন্যান্য শিল্পের জন্য তারা বায়ু ফিল্টার সহ শীল্ড অথবা হেলমেট এগুলি সরবরাহ করত। সুতরাং এই ঘটনার পরে এই কারখানাটি অস্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে, জিওনি বিয়ানচিনি এবং উনার অংশীদার তাদের সংস্থার কর্মীদের সুরক্ষিত রাখতে প্রযুক্তির সাহায্যে এইসব ব্যাক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামগুলিকে আরও কিভাবে উন্নত করে তোলা যায়, তার দিকে মনোযোগ দিয়েছিলেন। এখন তারা অন্যদের কাছে এই সরঞ্জামগুলি বিপণন করার চেষ্টা করছেন।
জিওনি বিয়ানচিনি আরও বলেন "এই মহামারী চলাকালীন যেসব মানুষকে কাজে ফিরে যেতে হয়েছে, তারা প্রতিদিন এই সমস্যাগুলি অনুভব করছেন।" স্মার্টসস্পেস একটি পরিধানযোগ্য ডিভাইস, যা ব্যবহারকারীরা যখন একে অপরের ছয় ফুটের মধ্যে যখন চলে আসে, তখন তাদেরকে আল্ট্রা ওয়াইডব্যান্ড ফ্রিকোয়েন্সিতে রেডিও তরঙ্গ ব্যবহার করে সতর্ক করে দেয়।
জিওনি বিয়ানচিনি বলেন,"মূলত, এটি এমন একটি র্যাডার যা পিছনে পিছনে সিগন্যাল প্রেরণ করে অন্য কোন ডিভাইস সন্ধানের চেষ্টা করে এবং তারিখ,দূরত্ব এবং সময় সবকিছু নিবন্ধন করে।" এই তথ্যটি যোগাযোগের সন্ধানের জন্যও ব্যবহার করা যেতে পারে। যদি কোনও মানুষ করোনভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন, তবে সেই প্রতিষ্ঠানের প্রশাসক অন্যান্য যে সমস্ত মানুষ তাদের সম্পর্কে এসেছেন, তাদেরকে অবহিত করতে পারেন।
সংস্থাটি আরও জানিয়েছে যে, এই সিস্টেমটি কেবল কর্মক্ষেত্রে যারা উপস্থিত থাকবেন, সেই সব মানুষদের গতিবিধি নির্ধারণ করতে পারবে। তাদের কারখানার শ্রমিকরা সারাদিন মুখে যে মাস্ক পরে থাকতেন, সেগুলিকেও প্রযুক্তির সাহায্যে কীভাবে উন্নত করা যায় তা নিয়ে বিয়ানচিনি চিন্তাভাবনা করছিলেন। তিনি আরও বলেন,"আমরা সুরক্ষার জন্য মুখের উপরে যে শীল্ড পরে থাকি, সেগুলি আমাদের কাছে যথেষ্ট কার্যকরী মনে হয়েছিল, কিন্তু আমরা ভাবছিলাম ‘শীল্ড ব্যবহারকারীদের কাছে বিশুদ্ধ বায়ু কিভাবে সরবরাহ করতে পারি এবং প্রশ্বাসের সঙ্গে যে বাতাস বেরিয়ে আসছে তার কণাগুলিকে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়’, তাই আমরা শীল্ডের ভিতরে ইউভি-সি এলইডি লাইটও সংযুক্ত করেছি, যাতে শীল্ডের অভ্যন্তরে শুদ্ধ বাতাসের ব্যবস্থা করা যায়।”
সংস্থাটি অন্তর্নির্মিত হেপা (HEPA, High Efficiency Particulate Air)ফিল্টার সহ একটি হেলমেট ডিজাইন করেছে। মহামারীতে নিরাপদে থাকার জন্য কাজ করার সময় সহকর্মীদের মুখগুলিও পরিষ্কার ভাবে দেখবার জন্য হেলমেটগুলিতে অতিরিক্ত ব্যবস্থা রয়েছে।