বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে ভারত বৃহস্পতিবার স্পেস ডকিং সাফল্য অর্জন করেছে। চল্লিশ হাজার কোটি ডলারের দ্রুত বর্ধমান বৈশ্বিক মহাকাশ মার্কেটে নিজেদের অংশীদারিত্ব বাড়ানোর উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণের ক্ষেত্রে এই সাফল্য ভারতের জন্য একটা প্রযুক্তিগত মাইলফলক।
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র বা ইসরোর দুটি উপগ্রহ ‘টার্গেট’ ও ‘চেজার’ বৃহস্পতিবার সকালে পরস্পরের সঙ্গে সফলভাবে সংযুক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন এই সংস্থার একজন মুখপাত্র। এই উপগ্রহগুলির আয়তন বড় রেফ্রিজারেটরের মতো প্রায়।
উপগ্রহ সার্ভিসিং, মহাকাশ কেন্দ্র পরিচালনা ও আন্তঃগ্রহ অভিযানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তি ভারতকে বাণিজ্যিক ও অন্বেষণমূলক মহাকাশ-উদ্যোগে এক প্রধান ভূমিকায় স্থান দিয়েছে।
জ্যোতিপদার্থবিদ জয়ন্ত মূর্তি বলেছেন, “ভারতের অনেক উচ্চাকাঙ্ক্ষী মিশনের পরিকল্পনা করা রয়েছে এবং সেগুলি অর্জন করতে এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি।”
তিনি আরও বলেন, “মহাকাশ কেন্দ্র গঠনের মতো বিভিন্ন মিশনের জন্য মহাকাশে অ্যাসেম্বলি প্রয়োজন যা স্পেস ডকিং ছাড়া সম্ভব নয়।”
ইসরো বলেছে, তাদের স্পেস ডকিং পরীক্ষায় (স্পেডেক্স) অংশগ্রহণকারী দুটি উপগ্রহ এখন একক বস্তু হিসেবে নিয়ন্ত্রিত হবে; আগামী কয়েক দিনে পরীক্ষা করে দেখা হবে বিদ্যুৎ স্থানান্তর করা যাচ্ছে কিনা।
ভারতের মূল মহাকাশ-বন্দর থেকে ৩০ ডিসেম্বর উৎক্ষিপ্ত স্পেডেক্স ভারতের তৈরি একটি রকেট দিয়ে উপগ্রহগুলিকে কক্ষপথে মোতায়েন করেছিল।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, দীর্ঘ অভিযান চলাকালে মহাকাশে শেষ পর্যন্ত খাদ্য উৎপাদন করা যাবে, তা দেখাতে এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
ডক হওয়া মহাকাশযানের মধ্যে বিদ্যুতের স্থানান্তর হচ্ছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখা হবে কেননা আন-ডকিং-এর পর মহাকাশে রোবোটিকস, সংযুক্ত মহাকাশযান নিয়ন্ত্রণ ও পে-লোড পরিচালনার মতো বিষয়গুলির জন্য এটা জরুরি।
একাধিক রকেট উৎক্ষেপণ প্রয়োজন, এমন মিশনের জন্য এই ধরনের কৌশল একান্ত অপরিহার্য।
মহাকাশ অন্বেষণ ও বাণিজ্যিকীকরণ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারতকে বিশ্বের সুপারপাওয়ার হিসেবে তুলে ধরার উদ্যোগের অন্যতম প্রধান অংশ।
মোদি এক্স (সাবেক ট্যুইটার) হ্যান্ডেলে বলেছেন, সফল স্পেডেক্স মিশন “আসন্ন সময়ে ভারতের উচ্চাকাঙ্ক্ষী মহাকাশ মিশনের একটি উল্লেখযোগ্য সোপান।”