বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সুরক্ষা দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) এশিয়া বিষয়ক উপপরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি।
মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সুরক্ষা দিতে হবে এবং গুমের বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত ও ক্ষতিপূরণে সহায়তা করতে হবে। একইসঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর বেসামরিক নজরদারির ব্যবস্থা করতে হবে।”
তবে তিনি সতর্ক করে বলেছেন, “ব্যাপক প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এবং আন্তর্জাতিক সমর্থন ছাড়া এর অগ্রগতি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।”
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ওয়ার্ল্ড রিপোর্ট-২০২৫-এ তিনি এ বিষয় তুলে ধরেন।
প্রতিবেদনে তিনি বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে মানবাধিকার পর্যবেক্ষকদের অবাধ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিবন্ধনের জন্য জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনারের সঙ্গে কাজ করতে হবে। যাতে তারা সুরক্ষা, চিকিৎসা সেবা এবং খাদ্য রেশন পেতে পারে।
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে সশস্ত্র গোষ্ঠী ও গ্যাংয়ের হাতে সহিংসতার ঝুঁকিতে রয়েছে। অনিবন্ধিত শরণার্থীরা ক্ষুধার ঝুঁকিতে রয়েছে এবং তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে এই ভয়ে তারা স্বাস্থ্যসেবা নেয় না।
জুলাই ও অগাস্টে তিন সপ্তাহ ধরে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভের ওপর দমন অভিযানের সময় নিরাপত্তা বাহিনীর অতিরিক্ত ও নির্বিচারে গুলি বর্ষণের কারণে ১ হাজারেরও বেশি লোক নিহত এবং কয়েক হাজার আহত হয়েছিল।
প্রতিবেদনেমীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেছেন, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গুমের ঘটনা তদন্তে একটি কমিশন গঠন করেছে এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের সংস্কার ও জবাবদিহিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এইচআরডব্লিউ বলছে, অন্তর্বর্তী সরকার জাতিসংঘের গুমবিষয়ক কনভেনশনে সম্মতি দিলেও নিরাপত্তা বাহিনী অবৈধভাবে আটকদের মুক্তি দিতে বা তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, সে সম্পর্কে তাদের পরিবারকে জবাব দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার জবাবদিহিতা ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে উল্লেখ করে এইচআরডব্লিউ বলেছে, অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার অফিসের সহায়তায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার করা। কুখ্যাত র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বিলুপ্ত করে স্বাধীন তদারকি ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা বাহিনীর সংস্কার করা এবং গুমের শিকার ও তাদের পরিবারের জন্য ন্যায়বিচার চাওয়া।