চলতি মৌসুমে ভারতের রাজধানীতে বায়ুদূষণ সবচেয়ে খারাপ পর্যায়ে পৌঁছেছে। তাই সোমবার দিল্লিতে কর্তৃপক্ষ স্কুল বন্ধ করে দিয়েছে, নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে এবং অপ্রয়োজনীয় ট্রাক শহরে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে।
বাতাসের মান ক্রমশ বিপজ্জনক হয়ে ওঠায় প্রায় ৩ কোটি ৩০ লাখ বাসিন্দার শহরটি নয়াদিল্লি ঘন, বিষাক্ত ধোঁয়াশায় ঢেকে গেছে। দেশটির প্রধান পরিবেশ সংস্থা সাফার জানায়, বায়ু মান মারাত্মক পর্যায়ে চলে গেছে। সংস্থাটি বাতাসের ক্ষুদ্র বস্তুকণা যা ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করতে পারে তা পরিমাপ করে থাকে।
মারাত্মক ধোঁয়াশায় রাজধানীর স্মৃতিস্তম্ভ এবং বহুতল ভবনগুলো ঢেকে গেছে। দৃশ্যমানতা এত কম ছিল যে, বিমান সংস্থাগুলো ফ্লাইট বিলম্ব হতে পারে বলে সতর্কতা জারী করে।
শহরের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে দূষণের মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রস্তাবিত নিরাপদ সীমার চেয়ে ৫০ গুণ বেশি ছিল। পূর্বাভাস বলছে, খারাপ বায়ুর গুণমান সপ্তাহ জুড়ে অব্যাহত থাকবে।
বিশেষত শীতকালে উত্তর ভারতে প্রতি বছর বায়ুদূষণ বৃদ্ধি পায়। কৃষকরা এ সময় কৃষি অঞ্চলে ফসলের অবশিষ্টাংশ পোড়ায়। জ্বলন্ত অবশিষ্টাংশ শীতল তাপমাত্রার সাথে মিলে বাতাসে ধোঁয়া আটকে দেয়। এরপর ধোঁয়া শহরের দিকে উরে যায়, যা বায়ু দূষণ আরও বাড়িয়ে তোলে।
শিল্প থেকে নির্গমন এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়লা পোড়ানোও দূষণের মধ্যে রয়েছে, যা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সোমবার থেকে কর্তৃপক্ষ বায়ু দূষণের তীব্রতার ওপর ভিত্তি করে গ্রেডেড রেস্পন্স অ্যাকশন প্ল্যান বা জিআরএপি-৪ এর চতুর্থ পর্যায় প্রয়োগ শুরু করেছে। পরিকল্পনার পূর্ববর্তী পর্যায়গুলো ইতোমধ্যে কার্যকর ছিল এবং চতুর্থ পর্যায়ে কঠোর বিধিনিষেধ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
রাজধানীর বাতাসের মানের অবনতি সামাজিক মাধ্যমে বাসিন্দাদের ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। অনেকে মাথাব্যাথা এবং হ্যাকিং কাশির অভিযোগ করে শহরটিকে “সর্বনাশা” এবং “গ্যাস চেম্বার” হিসেবে অভিহিত করেছে। অন্যরা জনস্বাস্থ্য সংকট স্থায়ীভাবে সমাধানের জন্য কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বেশ কয়েকটি সমীক্ষায় অনুমান করা হয়েছে, প্রতি বছর ১০ লাখের বেশি ভারতীয় দূষণ সম্পর্কিত রোগে মারা যায়।