ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত বিদ্রোহীদের ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলের একটি উন্মুক্ত স্থানে এসে পড়েছে। রোববার দিনের শুরুতে এই ঘটনা ঘটলে এ অঞ্চলে অবস্থিত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আকাশ হামলার সতর্কতাসূচক সাইরেন বেজে উঠে।
গাজায় প্রায় এক বছর ধরে চলা যুদ্ধের এটি সর্বশেষ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। ইসরায়েল ইঙ্গিত দিয়েছে, তারা সামরিক বাহিনীর মাধ্যমে পাল্টা আঘাত চালাতে পারে।
এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি বা বড় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে ইসরায়েলি গণমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে মানুষকে দৌড়ে বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আশ্রয়স্থানে দিকে যেতে দেখা গেছে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, এর অল্প সময় পরই তারা স্বাভাবিক কার্যক্রম আবারও শুরু করেছে।
এ ছাড়া, ফুটেজে ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলের একটি পল্লী এলাকায় আগুন দেখা গেছে। স্থানীয় গণমাধ্যমে এমন কিছু ছবি দেখানো হয়েছে, যা দেখে মনে হয়েছে একটি বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র বা ইন্টারসেপ্টরের অংশবিশেষ মধ্যাঞ্চলের শহর মোদিনের একটি ট্রেন স্টেশনের এস্কেলেটরের ওপর পড়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলছে, তারা তাদের বহুমুখী আকাশ হামলা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে এই ক্ষেপণাস্ত্রটিকে প্রতিহত করার বেশ কয়েক দফা প্রচেষ্টা চালায়, কিন্তু কোনোটি সফল হয়েছে কী না, তা এখনো জানা যায়নি।
তারা বলছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি মাঝ আকাশে বিচূর্ণ হয়, কিন্তু এ ঘটনাটি এখনো নিরীক্ষা করা হচ্ছে। সামরিক বাহিনী বলছে, এ অঞ্চলে বিমান-বিধ্বংসী ইন্টারসেপ্টর থেকে বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে।
গাজায় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি জঙ্গি সংগঠন হামাসের মধ্যে যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই হুথি নামে পরিচিত ইয়েমেনি বিদ্রোহীরা বারবার ইসরায়েল অভিমুখে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে। তবে প্রায় সবগুলো অস্ত্রই লোহিত সাগর পার হওয়ার আগেই প্রতিহত করা হয়েছে।
নেতানিয়াহুর হুমকি
জুলাই মাসে ইরানে নির্মিত ড্রোন ব্যবহার করে হুথিরা তেল আবিবে হামলা চালায়। এতে একজন নিহত ও ১০ জন আহত হন। পাল্টা জবাবে ইসরায়েল ইয়েমেনে হুথি অধিকৃত এলাকায় বেশ কয়েকদফা বিমান হামলা চালায়।
এসব হামলার অন্যতম লক্ষ্য ছিল হুথিদের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত বন্দর নগরী হোদেইদাহ।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রবিবারের হামলার পর একটি ক্যাবিনেট বৈঠক শেষে দেওয়া মন্তব্যে একই ধরনের পাল্টা জবাব দেওয়ার ইঙ্গিত দেন।
“হুথিদের এতদিনে জেনে যাওয়া উচিত যে কেউ আমাদের ক্ষতি করার কোনো উদ্যোগ হাতে নিলে তাকে সেজন্য চরম মূল্য দিতে হয়”, বলেন তিনি। “কাউকে যদি বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন হয়, তাহলে আমি তাদেরকে হোদেইদাহ বন্দর পরিদর্শন করার আমন্ত্রণ জানাই”।