অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

গাজায় বড় আকারে পোলিও টিকাদান শুরু করেছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ও জাতিসংঘ


গাজার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে নার্স এক শিশুকে পোলিওর টিকা দিচ্ছেন। ফটোঃ ৩১ অগাস্ট, ২০২৪।
গাজার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে নার্স এক শিশুকে পোলিওর টিকা দিচ্ছেন। ফটোঃ ৩১ অগাস্ট, ২০২৪।

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ও জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো রবিবার থেকে গাজা ভূখণ্ডে বড় আকারে পোলিও টিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে। তাদের প্রত্যাশা, এই উদ্যোগের মাধ্যমে চলমান ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে বিধ্বস্ত হয়ে পড়া এই ভূখণ্ডে পোলিওর প্রাদুর্ভাব প্রতিহত করা সম্ভব হবে।

বুধবার পর্যন্ত গাজার মধ্যাঞ্চলের শিশুদের টিকাদানের পরিকল্পনা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এরপর আরও বেশি ধ্বংসযজ্ঞের শিকার হওয়া গাজার উত্তর ও দক্ষিণ অংশে এই উদ্যোগ নিয়ে যাবেন তারা। শনিবার অল্প কিছু শিশুকে টিকা দেওয়ার মাধ্যমে এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এর লক্ষ্য মোট ছয় লাখ ৪০ হাজার শিশুকে টিকা দেওয়া।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বৃহস্পতিবার বলছে, ইসরায়েল এই কর্মসূচি পরিচালনাকে সহজ করার জন্য সীমিত আকারে যুদ্ধে বিরতি দিতে সম্মত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে রবিবারে দিনের শুরুতে গাজার মধ্যাঞ্চলে ইসরায়েলি হামলার তথ্য পাওয়া গেলেও এতে কেউ হতাহত হয়েছেন কি না, সে খবর তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

দেইর আল-বালাহ ও নুসেইরাতের হাসপাতালগুলো নিশ্চিত করেছে যে রবিবার সকাল থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে। শনিবার ইসরায়েল জানিয়েছে, ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন আট ঘণ্টা করে এই কর্মসূচি চলতে পারে।

মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ'র এক রাস্তায় বুলডোজার স্তূপ হয়ে জমে থাকা আবর্জনা পরিষ্কার করছে। ফটোঃ ২৭ অগাস্ট, ২০২৪।
মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ'র এক রাস্তায় বুলডোজার স্তূপ হয়ে জমে থাকা আবর্জনা পরিষ্কার করছে। ফটোঃ ২৭ অগাস্ট, ২০২৪।

সম্প্রতি গাজা কর্তৃপক্ষ ২৫ বছর পর প্রথমবারের মতো পোলিওর খবর দেয় - ১০ মাস বয়সী একটি ছেলে পোলিও আক্রান্ত হয়েছে। বর্তমানে ছেলেটির একটি পা পক্ষাঘাতগ্রস্ত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, একজন পক্ষাঘাতগ্রস্ত পোলিও আক্রান্ত শিশুকে চিহ্নিত করার অর্থ হল আরও শত শত শিশু এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারে, যাদের মধ্যে এখনো এ রোগের উপসর্গ দেখা দেয়নি।

বেশিরভাগ পোলিও আক্রান্ত মানুষের দেহে কোনো উপসর্গ দেখা দেয় না। আর যাদের দেখা দেয়, তারাও সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে সেরে ওঠেন। তবে এ রোগের কোনো চিকিৎসা নেই, এবং পোলিওর কারণে কেউ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হলে তা সাধারণত স্থায়ী হয়। যদি শ্বাসযন্ত্রের পেশীতে পক্ষাঘাত হয়, তাহলে তা মৃত্যুরও কারণ হতে পারে।

টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনায় বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। চলমান যুদ্ধে সড়ক ধ্বংস এবং হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে। গাজার ২৩ লাখ মানুষের মধ্যে ৯০ শতাংশই অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতির শিকার হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ আশ্রয়শিবিরের নোংরা তাঁবুর শিবিরে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছে।

পরিষ্কার করা সম্ভব না হওয়াতে জঞ্জাল জমে গেছে এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে বোমাহামলার কারণে সড়কে দূষিত ও ময়লা পানি প্রবাহিত হচ্ছে। যার ফলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এ ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাবের বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছেন। বড় আকারে দুর্ভিক্ষের কারণে মানুষ আরও বেশি মাত্রায় রোগাক্রান্ত হচ্ছে।

XS
SM
MD
LG