‘আন্দোলনকারী প্রকৃত শিক্ষার্থীদের হয়রানি করা হবে না', জানালেন হাছান মাহমুদ
আন্দোলনকারী প্রকৃত শিক্ষার্থীদের কোনো হয়রানি করা হবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তবে তিনি বলেছেন, “সাম্প্রতিক নাশকতার প্রতিটি হামলার ঘটনার বিচার হবে।”
শুক্রবার (২৬ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি। হাছান মাহমুদ বলেন, যারা গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের পিএসকে এবং ঢাকায় পুলিশ হত্যা করে, তাদের মরদেহ ঝুলিয়ে রেখেছে এবং চট্টগ্রামে ছয়তলা ভবন থেকে ছাত্রলীগ কর্মীদের ফেলে দিয়েছে; মানুষ ও রাষ্ট্রের সম্পত্তি জ্বালিয়ে দিয়েছে এবং বিটিভিতে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করেছে; তাদের কেউ আইনের হাত থেকে রেহাই পাবে না।
হাছান মাহমুদ আরো বলেন, “২০১৩-১৪ সালে নাশকতার পর অনেকের বিচার হয়েছে, কেউ কেউ আইনের ফাঁক গলে বের হয়ে গেছেন। এবার তেমনটা হবে না। প্রত্যেক হামলাকারীকে বিচারের আওতায় আনা হবে।”
হাছান মাহমুদ বলেন, “আমরা প্রথম থেকেই বলে এসেছি সর্বোচ্চ আদালতের মাধ্যমে সমাধান হবে। শেষ পর্যন্ত তাই হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যা চেয়েছিলো, তার থেকে বেশিই পেয়েছে। যদি শিক্ষার্থীরা একটু ধৈর্য্য ধরতো, তাহলে বিএনপি-জামায়াত এই সুযোগটা পেত না।”
“আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সাধারণ কোনো শিক্ষার্থী মানুষ হত্যা বা জনগণ ও রাষ্ট্রের সম্পত্তির ওপর হামলা চালাতে পারে না।” কোনো শিক্ষার্থী হয়রানির শিকার হবে না বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশ্বাস দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
(এই প্রতিবেদনের তথ্য ইউএনবি থেকে নেয়া হয়েছে।)
কোটা আন্দোলনের ২ সমন্বয়ক নাহিদ ও আসিফকে তুলে নেয়ার অভিযোগ
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদকে সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (২৬ জুলাই) ঢাকার ধানমন্ডি এলাকার গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে তাদেরকে তুলে নেওয়া হয় বলে জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক হাসিব আল ইসলাম।
হাসিব আল ইসলাম ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, “নাহিদ ও আসিফের পরিবারকে থেকে আমাদেরকে জানানো হয়েছে বেলা সাড়ে ৫ টার দিকে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে তাদেরকে তুলে নিয়ে যায় সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে। এখন পর্যন্ত তাদের কোনও খোঁজ পাচ্ছি না আমরা।”
গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল ঢাকার কলাবাগান থানার আওতাধীন। এই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজুল আলম ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, “নাহিদ ও আসিফকে তুলে নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।”
এরআগে গত ২০ জুলাই নাহিদ ইসলামকে ঢাকার নন্দীপাড়ার এলাকার একটি বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় বলে ওই সময় অভিযোগ করে তার বাদা বদরুল আলম। এরপর ২১ জুলাই পূর্বাচল এলাকার একটি ব্রিজের পাশে অজ্ঞান তাকে ফেলে যায়।
ওইদিন নাহিদ ইসলাম ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, “...তাকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের এক পর্যায়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে জ্ঞান ফিরলে তিনি নিজেকে পূর্বাচল এলাকার একটি ব্রিজের পাশে নিজেকে দেখতে পান।”
আর গত ২৪ জুলাই আসিফ মাহমুদ নিজের ফেসবুক পোস্টে লেখেন, গত ১৯ জুলাই রাত ১১ টায় হাতিরঝিল মহানগর আবাসিক এলাকা থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায়। পোস্টে তিনি আরও লেখেন, "না মানায় ইনজেকশন দিয়ে সেন্সলেস করে রাখা হয়। এই চার-পাঁচদিনে যতবার জ্ঞান ফিরেছে ততবার ইনজেকশন দিয়ে সেন্সলেস করে রাখা হয়।"
ওইদিনের পোস্টে তিনি আরও উল্লেখ করেন, ২৪ জুলাই সকাল ১১ টায় আবার একই জায়গায় চোখ বাঁধা অবস্থায় ফেলে দিয়ে যাওয়া হয়।
নাশকতার মামলায় সাংবাদিক গ্রেফতার, ৫ দিনের রিমান্ড
কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে ঢাকার মিরপুরে মেট্রোরেল স্টেশনে পোড়ানোর মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে দ্য মিরর এশিয়ার ঢাকা প্রতিনিধি সাঈদ খানকে।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) তার মগবাজারের বাসা থেকে ডিবি পুলিশের একটি দল এই সাংবাদিকদের গ্রেফতার করে বলে জানান তার পরিবার। শুক্রবার (২৬ জুলাই) তাকে আদালতে তোলা হয় এবং রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত শুনানি শেষে তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
সাঈদ খানের স্ত্রী ইতি ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, “গতকাল রাত সাড়ে ১২ টার দিকে ডিবি পুলিশের একটি দল তাকে বাসা থেকে আটক করে। আজ তাকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে মেট্রোরেল স্টেশন পোড়ানোর মামলায়।”
ইতি দাবি করেন, “কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় বিভিন্ন ব্যক্তির সাক্ষাৎকার গ্রহণ ও নিউজ করার কারণে তার স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি মেট্রোরেল স্টেশনে আগুণ দেওয়ার ঘটনায় জড়িত নন।”
সাঈদ খান বিএনপি পন্থী সাংবাদিকদের সংগঠন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক। এদিন সংগঠনটির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়- "ডিবি পুলিশ সাঈদ খানকে ধরে নেওয়ার পর সারা রাত ধরে তার উপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। রাতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে অবশেষে কাফরুল থানায় মেট্রোরেল মোড়ানোর মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।”
সংগঠনের পক্ষ থেকে অবিলম্বে সাঈদ খানের মুক্তির দাবি জানানো হয়।
ভারতীয় শিক্ষার্থীদের নিরাপদে স্বদেশে ফিরতে ঢাকার সহযোগিতার প্রশংসা করেছে দিল্লি
ভারতীয় ৬ হাজার ৭০০ শিক্ষার্থী নিরাপদে দেশে ফিরে যেতে বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে যে 'চমৎকার সহযোগিতা’ পেয়েছেন তার ভূয়সী প্রশংসা করেছে ভারত।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
তিনি বলেন, 'এ পর্যন্ত আমাদের ৬ হাজার ৭০০ ভারতীয় শিক্ষার্থী বাংলাদেশ থেকে ফিরে এসেছেন। আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে চমৎকার সহযোগিতা পেয়েছি।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সমর্থন ও সহযোগিতায় তারা তাদের শিক্ষার্থীদের নিরাপদে দেশে ফেরার ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়েছেন। এজন্য তারা 'গভীরভাবে' কৃতজ্ঞ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতে সম্পর্ক দৃঢ়, উষ্ণ ও অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ। ‘এভাবেই আমরা দেশটির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে দেখি।’
(এই প্রতিবেদনের তথ্য ইউএনবি থেকে নেয়া হয়েছে।)