আমরা এই লাইভ ব্লগের এখানেই ইতি টানছি। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
সরকার বলছে, প্রতিটি ছাত্রের মৃত্যু তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা হবে
বাংলাদেশ সরকার রবিবার (২৮ জুলাই) এক বিবৃতিতে দেশের সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগের কথা আমলে নিয়ে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে বলেছে, ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় কতজন মারা গেছে তা যাচাই করা হচ্ছে এবং দায়ী ব্যক্তিদের তদন্তের মাধ্যমে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে। বিবৃতিতে সেনাবাহিনী মতায়েন, ‘শুট অ্যাট সাইট’ নির্দেশ, জাতিসংঘের সাঁজোয়া ব্যবহারসহ কয়েকটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ব্যাপারে সরকারের ব্যাখ্যা দেয়া হয়।
“সাম্প্রতিক সহিংসতা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ঠিক কতজন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, তা নির্ধারণ করতে সরকার দুর্ভাগ্যজনক প্রাণহানি, হতাহতের ঘটনা এবং রাষ্ট্রীয় সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি যাচাই করছে। সরকার নিহতদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করছে, এবং তাদের ক্ষতির ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত এবং তাদের পরিবারের যে মানসিক বিপর্যয় হয়েছে, সে ব্যাপারে সরকার সংবেদনশীল,” পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়।
ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে ভয়েস অফ আমেরিকাকে পাঠানো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই বিবৃতিতে বলা হয়, “প্রতিটি ছাত্রের মৃত্যু এবং হত্যাকাণ্ড, অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর, নাশকতামূলক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সঠিকভাবে তদন্তের মাধ্যমে দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্য সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট ডিভিশনের একজন বিচারকের নেতৃত্বে ১৮ জুলাই একটি ইনকুয়ারি কমিশন ইতোমধ্যেই গঠন করা হয়েছে।”
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায় যে, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক “সহিংসতা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ে সুশীল সমাজের কিছু সংগঠন এবং মিডিয়া সহ আন্তর্জাতিক সহযোগীদের উদ্বেগ প্রকাশ বাংলাদেশ সরকার মনোযোগ সহকারে লক্ষ্য করেছে।” তবে উদ্বেগ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র সহ ঢাকায় অবস্থিত ১৪টি দূতাবাস যে চিঠি দিয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা হয় নি।
বাংলাদেশ সরকার পরিস্থিতির “অপব্যাখ্যার” জন্য ভুয়া তথ্য প্রবাহকে দায়ী করে বলে যে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সরকারের প্রতি সহানুভূতিশীল।
“ব্যাপক অপপ্রচার এবং ভুয়া তথ্য ছড়ানোর পটভূমিতে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রবল সমর্থন এবং সহানুভূতির জন্য বাংলাদেশ সরকার কৃতজ্ঞ। বাংলাদেশ সরকার সকল আন্তর্জাতিক সহযোগীদের আশ্বস্ত করতে চায় যে, সরকার এবং জনগণের উপযুক্ত পদক্ষেপের কারণে সার্বিক পরিস্থিতি পুনরায় স্বাভাবিক হয়ে আসছে,” বিবৃতিতে বলা হয়।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম এবং সামাজিক মাধ্যমে কয়েকটি নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে, যেগুলো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ
১) “সন্ত্রাসী ঘটনার প্রেক্ষিতে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করার লক্ষ্যে মোতায়েন করা নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা একটিও ‘শুট অ্যাট সাইট’ বা ‘দেখা মাত্র গুলি’ করার ঘটনা ঘটে নি।”
২) “আইন শৃঙ্খলা অভিযানের সময় হেলিকপ্টার থেকে গুলিবর্ষণের কোন ঘটনা ঘটে নি। হেলিকপ্টার শুধুমাত্র নজরদারি, কয়েকটি জায়গা থেকে আটকে পরা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উদ্ধার এবং দমকল বাহিনীর অগ্নিনির্বাপক যানের যাতায়াতে সহায়তা করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।”
৩) “একটি সাদা রং-এর সাঁজোয়া গাড়ি এপিসিতে জাতিসংঘের ইনসিগনিয়া দৃশ্যম্যান থাকার পেছনে কোন উদ্দেশ্য ছিল না। সাঁজোয়া যানে রং দেয়ার পরও ইউ এন ইনসিগনিয়া অনিচ্ছাকৃতভাবে দৃশ্যমান ছিল। এই এপিসি দ্রুত প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ইউএন ইনসিগনিয়া সহ পরিবহন ব্যবহার করছে বলে অন্য যেসব ছবি বেরিয়েছে, সেগুলোর সততার কোন ভিত্তি নেই।”
নির্দিষ্ট অভিযোগের ব্যাখ্যা ছাড়াও বিবৃতিতে ছাত্রদের আন্দোলন কীভাবে সহিংসতা এবং ব্যাপক প্রাণহানির দিকে গড়ালো, তার ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। সরকারের ভাষ্য অনুযায়ী, ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সরকার উৎখাতের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার জন্য তা বেদখল করা হয়।
“এটা এখন পরিষ্কার যে, সন্ত্রাস এবং অরাজকতার রাজত্ব কায়েম করার লক্ষ্যে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি এবং বাংলাদেশ জামাত-এ-ইসলামির ছাত্র সংগঠন ইসলামি ছাত্র শিবির-এর নেতৃত্বে একটি স্বার্থান্বেষী মহল কোটা সংস্কারের দাবীতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন বেদখল করে নেয়। তারা কিছু উগ্রবাদী এবং সহিংস গোষ্ঠীর সাহায্য পেতেও সক্ষম হয়, যার মাধ্যমে তারা জনজীবন ব্যাহত করে, অর্থনীতির চাকা বন্ধ করে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের জন্য ছাত্রদের আন্দোলন দখল করে।
“এই একই কায়েমি স্বার্থবাদী মহল এখন, স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে, তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর আইনসম্মত পদক্ষেপকে ‘ছাত্র আন্দোলন দমন’ হিসেবে দেখানোর জন্য ভুয়া প্রচারণা এবং গুজব রটনা চালিয়ে যাচ্ছে।
“কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতারা বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে ছাত্রদের আন্দোলনের কোন সম্পর্ক নাই বলে জনসমক্ষে বিবৃতিয় দেয়ার পরও এ’ধরনের বিকৃত তথ্য প্রবাহ বেড়ে চলছে,” বিবৃতিতে বলা হয়।
সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানায়, যাতে তারা ছাত্র আন্দোলনের মূল ইস্যুর সাথে পরবর্তী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে এক করে না দেখে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, জীবন এবং সম্পত্তি রক্ষার জন্য সেনা বাহিনী মোতায়েন করে হয়।
“সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য সেনাবাহিনী আইনের ভিত্তিতে মোতায়েন করা হয় এবং মানুষের জীবন এবং সম্পত্তি রক্ষা করার জন্য নির্দিষ্ট এলাকায়, নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সান্ধ্য আইন জারী করা হয়,” পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলে।
পাঁচ সমন্বয়ককে দিয়ে জোর করে বিবৃতি দেওয়ানো হয়েছে বলে দাবী অন্যান্য সমন্বয়কদের
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যান্য সমন্বয়করা হেফাজতে থাকা পাঁচ সমন্বয়ককে দিয়ে জোর করে বিবৃতি দেওয়ানো হয়েছে বলে দাবী করেছেন।
এর আগে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের হেফাজতে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাঁচ সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদার, সারজিস আলম এবং হাসনাত আব্দুল্লাহ একটি বিবৃতি দেন যেখানে 'সার্বিক স্বার্থে' কর্মসূচী প্রত্যাহার করে নেয়ার কথা বলা হয়।
সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ তার বিবৃতিতে বলেছেন, "ডিবি কার্যালয়ে সমন্বয়কদের জিম্মি করে ব্ল্যাকমেইল করে এই লিখিত বক্তব্য পাঠ করানো হয়েছে।অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বিবৃতি আদায় ছাত্রসমাজ মেনে নিবে না।"
সহ-সমন্বয়ক রিফাত রশিদ বলেছেন, "জিম্মি করে অস্ত্রের মুখে ডিবি অফিসে হাতে স্ক্রিপ্ট ধরিয়ে জোরপূর্বক যে বিবৃতি দেয়া হয়েছে তা এদেশের ছাত্রসমাজ প্রত্যাখ্যান করেছে..।"
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল কাদের তার বিবৃতিতে বলেছেন, "সমন্বয়কদের জিম্মি করে নির্যাতনের মুখে যে স্টেটমেন্ট দেওয়ানো হইছে, সেটা কখনোই জাতির নিকট গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। আটককৃত সমন্বয়করা ভয়ভীতির মুখে গোয়েন্দা সংস্থার লিখে দেওয়া যে বক্তব্য কেবল রিডিং পড়ে গেছে, আমরা সেই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করছি এবং একইসাথে জোরপূর্বক বক্তব্য আদায় করার মতো সরকারের এমন জঘন্য কাজের তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি।"
কর্মসূচী প্রত্যাহার করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাঁচ সমন্বয়কের বিবৃতিটি পাঠ করেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। তার পাশে আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদার, সারজিস আলম এবং হাসনাত আব্দুল্লাহকে বসে থাকতে দেখা যায়।
নাহিদ ইসলাম বলেন, "কোটা সংস্কার আন্দোলন ও তার প্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনেকে অপ্রত্যাশিতভাবে আহত এবং নিহত হয়েছেন। তাছাড়া, রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় অগ্নিসংযোগসহ নানা সহিংস ঘটনা ঘটেছে। আমরা এই সকল অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত বিচারের দাবী জানাই। আমাদের প্রধান দাবী ছিল কোটার যৌক্তিক সংস্কার যা ইতোমধ্যে সরকার পূরণ করেছেন, এখন শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানাই। সার্বিক স্বার্থে আমরা এই মুহুর্ত থেকে আমাদের কর্মসূচী প্রত্যাহার করছি।"
রবিবার নাহিদ ইসলামের মা মমতাজ নাহার অভিযোগ করেন, তাঁরা নাহিদের সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও তাঁদের গোয়েন্দা বিভাগের কার্যালয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
গত শুক্রবার বিকেলে ঢাকার গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসাধীন কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারকে পুলিশ হেফাজতে নেয়। পরে শনিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন সমন্বয়ক সারজিস আলম এবং হাসনাত আব্দুল্লাহকে গোয়েন্দা পুলিশ তাদের হেফাজতে নিয়েছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের পাঁচ সমন্বয়ককে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে রবিবার (২৮ জুলাই) জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেন, পুলিশ তাদের ঝুঁকিমুক্ত মনে করলে ছেড়ে দেয়া হবে।
রবিবার (২৮ জুলাই) নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন-অর-রশীদ বলেন, “সমন্বয়কারীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে আমাদের হেফাজতে নিয়েছি। আমরা তাদের পরিবারকে আশ্বস্ত করছি যে চিন্তার কোনো কারণ নেই। আমরা তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছি এবং তাদের পরিবারকেও এ বিষয়ে আশ্বস্ত করতে হবে।”
এর আগে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন-অর-রশীদ হেফাজতে থাকা পাঁচ সমন্বয়কের সাথে ডিনারের ছবি তার ফেসবুকে শেয়ার করেন।
কোটা আন্দোলনের কর্মসূচী প্রত্যাহার করে পাঁচ সমন্বয়কের বিবৃতি
কর্মসূচী প্রত্যাহার করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাঁচ সমন্বয়কের বিবৃতির একটি ভিডিও ভয়েস অফ আমেরিকার হাতে এসেছে। এই ভিডিওটি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয় থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
ভিডিওতে বিবৃতিটি পাঠ করেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। তার পাশে আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদার, সারজিস আলম এবং হাসনাত আব্দুল্লাহকে বসে থাকতে দেখা যায়।
নাহিদ ইসলাম এই বিবৃতিতে বলেন, "কোটা সংস্কার আন্দোলন ও তার প্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনেকে অপ্রত্যাশিতভাবে আহত এবং নিহত হয়েছেন। তাছাড়া, রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় অগ্নিসংযোগসহ নানা সহিংস ঘটনা ঘটেছে। আমরা এই সকল অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত বিচারের দাবী জানাই। আমাদের প্রধান দাবী ছিল কোটার যৌক্তিক সংস্কার যা ইতোমধ্যে সরকার পূরণ করেছেন, এখন শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানাই। সার্বিক স্বার্থে আমরা এই মুহুর্ত থেকে আমাদের কর্মসূচী প্রত্যাহার করছি।"
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাঁচ সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদার, সারজিস আলম এবং হাসনাত আব্দুল্লাহ এখন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের হেফাজতে রয়েছেন।
রবিবার নাহিদ ইসলামের মা মমতাজ নাহার অভিযোগ করেন, তাঁরা নাহিদের সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও তাঁদের গোয়েন্দা বিভাগের কার্যালয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
গত শুক্রবার বিকেলে ঢাকার গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসাধীন কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারকে পুলিশ হেফাজতে নেয়। পরে শনিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন সমন্বয়ক সারজিস আলম এবং হাসনাত আব্দুল্লাহকে গোয়েন্দা পুলিশ তাদের হেফাজতে নিয়েছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের পাঁচ সমন্বয়ককে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে রবিবার (২৮ জুলাই) জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেন, পুলিশ তাদের ঝুঁকিমুক্ত মনে করলে ছেড়ে দেয়া হবে।
রবিবার (২৮ জুলাই) নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন-অর-রশীদ বলেন, “সমন্বয়কারীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে আমাদের হেফাজতে নিয়েছি। আমরা তাদের পরিবারকে আশ্বস্ত করছি যে চিন্তার কোনো কারণ নেই। আমরা তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছি এবং তাদের পরিবারকেও এ বিষয়ে আশ্বস্ত করতে হবে।”
এর আগে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন-অর-রশীদ হেফাজতে থাকা পাঁচ সমন্বয়কের সাথে ডিনারের ছবি তার ফেসবুকে শেয়ার করেন।