ভারতে লোকসভা নির্বাচন শেষ হওয়ার পর সংসদের প্রথম অধিবেশনে সোমবার সে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দৃঢ় ও শক্তিশালী বিরোধী দলের কাছে ঐকমত্যের আবেদন জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই নির্বাচনে মোদির দল বিজেপি বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে এবং এক দশকে প্রথমবার মোদি জোট-সরকার গঠন করতে বাধ্য হয়েছেন।
সংসদের প্রথম অধিবেশন ৩ জুলাই পর্যন্ত চলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই নিয়ে মোদি তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হলেন। এই অধিবেশনে প্রধান বিরোধী দলনেতা হিসেবে রাহুল গান্ধিকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিযুক্ত করার সম্ভাবনা রয়েছে। এই পদটি ২০১৪ সাল থেকে খালি ছিল।
বর্তমানে বিশ্লেষকদের ধারণা, ৭৩ বছর বয়সী মোদি এনডিএ সরকারের জোট-শরিকদের শান্ত করতে তার হিন্দু জাতীয়তাবাদী কর্মসূচিকে নমনীয় ও সহনশীল করবেন এবং পরিকাঠামো, সামাজিক কল্যাণ ও অর্থনৈতিক সংস্কারের দিকেই বেশি নজর দেবেন।
সংসদে প্রবেশের ঠিক আগে এক ভাষণে মোদি বলেন, “দেশ চালাতে গেলে সর্বসম্মতি একান্ত অপরিহার্য।” তিনি বিরোধীদের গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতেও আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, “মানুষ চায় দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি নিয়ে তাদের প্রতিনিধিরা বিতর্ক ও আলোচনা করুন…সংসদীয় প্রক্রিয়ায় তারা কোনও বিঘ্ন ও বাধা-বিপত্তি চায় না।”
তার কথায়, “মানুষ কাজ চায়, স্লোগান নয়।”
মোদির দলের সাংসদরা এ দিন শপথ নিয়েছেন এবং উচ্ছ্বসিত সমর্থকরা টেবিল চাপড়ে তাদের উৎসাহ দিয়েছেন। এদিকে, এর প্রতিবাদে বিরোধী দলের সদস্যরা সংবিধান তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ভারতকে “সেবা করতে পেরে তিনি গর্বিত।”
সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু সোমবার “শান্তিপূর্ণ ও ফলদায়ী” অধিবেশনের আহ্বান জানিয়েছেন, তবে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলেছে, বিরোধীরা এবার অনেকটা শক্তিশালী হওয়ায় তারা প্রাণবন্ত ও জোরালো বিতর্ক প্রত্যাশা করেছিল।
সোমবার হিন্দুস্তান টাইমস শিরোনাম করেছে, “মল্লযুদ্ধের জন্য ক্ষেত্র প্রস্তুত।”
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, “পুনরায় জেগে ওঠা বিরোধী দল সরকারকে চাপ দিতে তৈরি।”
বিশ্লেষকদের ধারণাকে নস্যাৎ করে দিয়ে ৫৪ বছর বয়সী রাহুল গান্ধি সংসদে কংগ্রেসের আসন সংখ্যাকে প্রায় দ্বিগুণ করতে সাহায্য করেছেন। এক দশক আগে নির্বাচনে ঝড় তুলে মোদির ক্ষমতায় আসার পর থেকে এটাই কংগ্রেসের সবচেয়ে ভাল ফলাফল।
সংসদীয় বিধি-নিয়ম অনুযায়ী, বিরোধী নেতা হতে গেলে ওই সাংসদকে এমন একটি দলের সদস্য হতে হবে যে দল লোকসভার ৫৪৩টি আসনের মধ্যে অন্তত ১০ শতাংশ আসন দখল করেছে।
এই পদ দীর্ঘ দশ বছর ধরে খালি ছিল কারণ ভারতের এক সময়ের প্রধান রাজনৈতিক দল কংগ্রেস দুটি লোকসভা নির্বাচনে অত্যন্ত খারাপ ফল করেছিল। ফলত তারা বিরোধী নেতা হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত তারা পূরণ করতে পারেনি।