ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রবিবার নয়াদিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবনে এক জমকালো অনুষ্ঠানে টানা তৃতীয় মেয়াদের জন্য শপথ নেন, যা ভারতের ইতিহাসে বিরল। কিন্তু, তিনি কোয়ালিশন সরকারের প্রধান হিসেবে আগের থেকে কম জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় ফিরছেন।
এক দশক ধরে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ভারত শাসন করার পর একজন দৃঢ়চেতা নেতা হিসেবে মোদি কীভাবে তার নতুন মেয়াদ পরিচালনা করবেন সেদিকে এখন সবার দৃষ্টি। তার ভারতীয় জনতা পার্টি, বা বিজেপি, সংসদে অর্ধেক আসনসংখ্যা অতিক্রম করতে ব্যর্থ হওয়ায়, তিনি এখন আঞ্চলিক মিত্রদের উপর নির্ভরশীল।
শুক্রবার তার জোটের অংশীদারদের সাথে একটি বৈঠকে মোদী বলেন, “দেশ পরিচালনার জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা অপরিহার্য, এটাই গণতন্ত্রের মূল কথা। কিন্তু একটি দেশ চালানোর জন্য, ঐকমত্যও অপরিহার্য।"
জোটের রাজনীতি
বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন শাসন পদ্ধতির সাথে সেই ঐকমত্য অর্জন করা ভারতীয় এই নেতার জন্য একটি পরীক্ষা হবে। যদিও কোয়ালিশন বা জোট সরকার ভারতের জন্য নতুন কিছু না, তবে তার দলের বাইরের অংশীদারদের পরিচালনার টানাপড়েন এবং চাপ মোদীর জন্য একটি অজানা ক্ষেত্র। কোয়ালিশন সরকার ২০১৪ সাল পর্যন্ত এক চতুর্থাংশ শতাব্দী ধরে দেশটিকে শাসন করেছে।
সাম্প্রতিক নির্বাচনের আগ পর্যন্ত সমাবেশে এবং সাক্ষাত্কারে, মোদী বলেন তিনি বড় লক্ষ্যগুলি পূরণ করার জন্য ১০০ দিনের একটি পরিকল্পনা তৈরি করেছেন। তবে তার লক্ষ্য অর্জন করা আরও কঠিন হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
বিশ্লেষকরা বলেন, তিনি উৎপাদন শিল্পে দ্রুত সংস্কার সাধনে এবং ভারতের অর্থনীতি বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে তার মিত্রদের সঙ্গে আনতে সক্ষম হবেন। রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক বজায় রেখে প্রতিবেশী দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য দেশটির প্রচেষ্টাতেও ব্যাপক ঐকমত্য রয়েছে।
তবে, তার দলের হিন্দু জাতীয়তাবাদী এজেন্ডা পিছিয়ে যেতে পারে। যদিও তার জোটের বিভিন্ন অংশীদার রয়েছে, এর মধ্যে দুটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র, অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের তেলেগু দেশম পার্টি এবং বিহারের জনতা দল (ইউনাইটেড) ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলির অন্তর্গত। তারা বিজেপির হিন্দুরা প্রথম এজেন্ডা অনুসরণ করে না।