ভারত ও ইরান ইরানের চাবাহার বন্দরের উন্নয়ন ও পরিচালনার জন্য ১০ বছরের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এর অধীনে নয়াদিল্লি স্থলবেষ্টিত মধ্য এশিয়ার প্রজাতন্ত্রগুলোর সাথে কৌশলগত বাণিজ্য রুটের পরিকল্পনা করেছে। এটি সম্ভবপর হলে প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে এড়িয়ে যাওয়া যাবে।
ভারত বলেছে, এই চুক্তি বাণিজ্যের জন্য নতুন পথ উন্মুক্ত করেছে। তবে ইরানের সাথে সম্পর্কের অবনতি হওয়া যুক্তরাষ্ট্র তেহরানের সাথে ব্যবসায়িক চুক্তির কথা বিবেচনা করলে সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছে।
নয়াদিল্লির বিশ্লেষকরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞার হুমকি বন্দরটিকে বাণিজ্য কেন্দ্রে পরিণত করার আশা ম্লান করে দিতে পারে।
সোমবার ইরানের চাবাহার শহরে ভারতের জাহাজ চলাচল মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনাওয়াল এবং ইরানের নগর উন্নয়ন মন্ত্রী মেহেরদাদ বাজরপাশ এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
এই চুক্তির আওতায় ভারত ১০ বছরের জন্য এই বন্দর ব্যবহারের সুযোগ পাবে।
ওয়াশিংটন ইরানের ওপর আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার পর ২০১৬ সালে ভারত নতুন কার্গো বার্থ এবং টার্মিনাল নির্মাণের মাধ্যমে চাবাহার বন্দরের উন্নয়নে সহায়তা শুরু করে। ২০১৮ সালে ট্রাম্প প্রশাসন এই নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনরায় আরোপ করে।
ভারত ও ইরান ১০ বছরের চুক্তিতে স্বাক্ষর করার পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল সাংবাদিকদের বলেন, ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে এবং ওয়াশিংটন তা বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখবে।
চাবাহার ভারতের প্রথম বিদেশী বন্দর উদ্যোগ এবং নয়াদিল্লির জন্য এটি সম্পদ সমৃদ্ধ মধ্য এশিয়ার প্রজাতন্ত্রগুলো এবং আফগানিস্তানের সাথে সংযোগ উন্নত করার কৌশলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সেখানে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কয়েক দশক ধরে বৈরী সম্পর্কের কারণে প্রবেশ বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
চাবাহারকে পাকিস্তানের গোয়াদর বন্দরে চীনের উন্নয়নের পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবেও দেখা হয়। পাকিস্তানের সাথে ইরানের দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তের কাছে অবস্থিত গভীর জলের চাবাহার বন্দরটি গোয়াদার থেকে ১০০ কিলোমিটারেরও কম দূরত্ব অবস্থিত।
বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অংশ হিসেবে ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোর বন্দর ও অবকাঠামোতে বেইজিং-এর বিনিয়োগের কারণে নয়াদিল্লিতে উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এবং ভারতকে তার সামুদ্রিক প্রভাব বাড়াতে প্ররোচিত করেছে।