ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী মঙ্গলবার বলেছে তারা গাজা উপত্যকা এবং মিশরের মধ্যবর্তী রাফা ক্রসিংয়ের গাজা অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। বার বার বিমান হামলা চালানোর একদিন আগে কয়েক হাজার ফিলিস্তিনিকে অঞ্চলটি ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া তারা।
কয়েক সপ্তাহ ধরেই ইসরায়েলি কর্মকর্তারা হামাসকে পরাজিত করার লক্ষ্য অর্জনের জন্য রাফায় আক্রমণ প্রয়োজনীয় বলে আসছেন। এই অভিযানের আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ এবং অন্যরা জনবহুল ফিলিস্তিনের এই বেসামরিক অঞ্চলে আক্রমণ শুরু করা মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে বলে সতর্ক করেছে ।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, “এই অভিযানের কারণে আবারও অনেক হতাহত ও বেসামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে বলে আমি আশঙ্কা করছি। তারা যাই যাই বলুক না কেন, গাজায় যাবার মতো কোনো নিরাপদ জায়গা অবশিষ্ট নেই।”
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান “আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অপ্রতিরোধ্য দাবির” কথা উল্লেখ করেন। গুরুতর মানবিক বিপর্যয় এড়াতে ইসরায়েলকে গাজায় হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে চীন।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থার মুখপাত্র জেনস লায়ের্ক সাংবাদিকদের কাছে ইসরায়েলের সেনাদের রাফা ও কেরেম শালোম ক্রসিং বন্ধ করে দেয়া এবং গাজায় মানবিক ত্রাণ আনার জন্য ব্যবহৃত প্রধান দুটি রুটে প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দেবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একটি পোস্ট দিয়ে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, তাদের প্রধান লক্ষ্য জিম্মিদের মুক্তি এবং হামাসের পরাজয়। এ কারণেই রাফায় ইসরায়েলের এই পদক্ষেপ।
এর আগে সোমবার, মিশর ও কাতারি আলোচকদের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নেয়ার ঘোষণা দেয় হামাস।
যদিও, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় একইদিনে বলে, "ইসরায়েলের অপরিহার্য দাবি থেকে অনেক দূরে" রয়েছে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবটি। তবে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য কায়রোতে আলোচক পাঠাবে তারা।
যুদ্ধবিরতি প্রচেষ্টা জোরদারে গত সপ্তাহেই এই অঞ্চল সফর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। সেসময় হামাসকে তিনি বারবার যুদ্ধবিরতিতে ইসরায়েলের ছাড়ের কথা জানিয়ে হামাসকে প্রস্তাবটি মেনে নেওয়ার জন্য চাপ দিয়েছেন।
তবে, ইসরায়েলি কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে হামাস অনুমোদিত পরিকল্পনার সাথে ইসরায়েল সম্মত হয়নি বলে জানিয়েছে। যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি তাদের কাছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও হোয়াইট হাউস হামাসের প্রতিক্রিয়া পর্যালোচনা করে দেখছে বলে জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।
প্রতিবেদনের কিছু তথ্য এপি, এ এফপি এবং রয়টার্স থেকে নেওয়া হয়েছে।