সোমবার ২৯ জানুয়ারি ঘুষের বিনিময়ে রেলে চাকরি দেওয়ার অভিযোগের তদন্তে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি তলব করেছিল আরজেডি সুপ্রিমো তথা বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব ও তার ছেলে তেজস্বী যাদবকে। ইডি-র সমন পেয়ে হাজিরা দিয়েছিলেন লালুপ্রসাদ যাদব।
সোমবার ভারতীয় সময় সকাল ১১টায় ইডির অফিসে ঢোকেন তিনি। সারা দিন ধরে ম্যারাথন জেরা করা হয় তাকে। প্রায় ৯ ঘন্টা পরে ভারতীয় সময় সন্ধ্যা ৮টায় এই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ইডির অফিস থেকে বেরোন।
এই মামলায় অপর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই আগেই লালুপ্রসাদ ও তেজস্বীকে জেরা করেছে। সিবিআই-এর দায়ের করা মামলায় বেআইনি পথে অর্থ লেনদেনের অভিযোগের তদন্ত করছে ইডি।
গত ১৯ জানুয়ারি একটি নোটিস ইস্যু করে লালুপ্রসাদ যাদবকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সেই সূত্র ধরেই সোমবার ইডির অফিসে হাজিরা দিতে আসেন তিনি।
ইডি-র অফিসের বাইরে আরজেডি কর্মী-সমর্থকদের বিরাট সংখ্যায় উপস্থিতি ছিল সোমবার। রাষ্ট্রীয় জনতা দলের তরফে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, দুই নেতাকে গ্রেফতার করতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা।
পশু খাদ্য কেলেঙ্কারির মামলায় লালুপ্রসাদ বর্তমানে জামিনে মুক্ত। তার জামিন খারিজ করে ফের জেলে পাঠাতে তৎপর সিবিআই দিল্লি হাইকোর্টে মামলা করেছে। আরজেডি নেতৃত্ব আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, লোকসভা ভোটের আগে দলীয় নেতাকে আবার জেলে ফেরাতে চাইছে মোদী সরকার।
বিহারের রাষ্ট্রীয় জনতা দলের প্রধান তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব ২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন নিজের আত্মীয়-পরিজনদের রেলে নিয়োগ এবং রেলের সম্পত্তি তাদের নামে করে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই তার নামে তদন্ত শুরু করে। পরবর্তী সময়ে এই মামলাতে তার স্ত্রী, পুত্র, কন্যা ছাড়া আরও ১৪ জনের নাম যুক্ত হয়।
আইআরসিটিসি দুর্নীতি মামলায় লালুপ্রসাদ যাদব, তার স্ত্রীকে আগেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। এবার সেই মামলায় তাদের সমন পাঠাল দিল্লির আদালত। আগামী মাসেই হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাদের।
দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত ইডির চার্জশিটকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ি দেবী এবং তাঁর দুই কন্যা মিশা ভারতী, হেমা যাদবকে সমন পাঠিয়েছে। এই দুর্নীতি মামলায় তারাও অভিযুক্ত।
তাদের সকলকে আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি আদালতে সশরীরে হাজিরা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে ইডি আরজেডি সুপ্রিমো লালুপ্রসাদ যাদব এবং তার পুত্র তেজস্বী যাদবকেও একই মামলায় তলব করেছিল।
২০০৪ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত রেলমন্ত্রী ছিলেন লালুপ্রসাদ। রেলে মন্ত্রীর কোটায় গ্রুপ ডি পদে চাকরি দেওয়ার সুযোগ আছে। সিবিআই-এর অভিযোগ, লালুপ্রসাদ যাদবের পরিবার মন্ত্রীর কোটার চাকরি বিক্রি করে বড় অঙ্কের অর্থ পেয়েছে।
অভিযোগ এই ক্ষেত্রে নগদ টাকার পরিবর্তে চাকরি প্রাপকদের কাছ থেকে অল্প দামে জমি কিনে নেয় লালুপ্রসাদের পরিবারের সদস্যরা। পরে সেই জমি বেশি দামে বিক্রি করে বিপুল অর্থ রোজগার করেছে তারা। তদন্তে নেমে ইডি ও সিবিআই লালুপ্রসাদের স্ত্রী রাবড়ি দেবী, পুত্র তেজস্বী ও তাদের পাঁচ কন্যাকে জেরা করে। সকলের নামেই জমি কেনা হয়েছিল বলে অভিযোগ।