২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে. ভারতের লোকসভায় পাশ হয়েছিল নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদের উচ্চকক্ষে এই বিল পেশ করার পর রাজ্যসভাতেও তা পাশ হয়ে আইনে পরিণত হয়।
অন্য ধর্মের মানুষদের এই আইনের আওতায় আনা হলেও নির্দিষ্ট করে মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষদের তার অধীনে যাতে না আনা হয়, তার জন্য বিরোধী রাজনীতিবিদ এবং সাধারণ নাগরিকদের প্রতিবাদ ও সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছিল নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল।
বিলটি সংসদের দুই কক্ষে পাশ হয়ে আইনে পরিণত হয়েছিল। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগেই তা লাগু হতে চলেছে বলে কেন্দ্র সূত্রে জানা যাচ্ছে।
বিল থেকে আইন হয়েছিল ৪ বছর আগেই। তারপর চলছিল ধারা প্রস্তুত করা। সেই কাজ বর্তমানে শেষ পর্যায়ে। শেষ পর্যায়ের কাজ শেষ হলেই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে লাগু হতে চলেছে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন।
এই আইনের লক্ষ্য, মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে নিপীড়িত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া হিন্দু, পার্সি, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন এবং খ্রিস্টানদের নাগরিকত্ব প্রদান করা। মুসলিম শরণার্থীদের এই তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
এই আইনের বিরূদ্ধে একাধিক হিংসার ঘটনাও ঘটেছিল দেশ জুড়ে। বাস, ট্রেনে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করা হয়েছিল। প্রতিবাদ, বিক্ষোভ চললেও কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আইন প্রত্যাহার করেনি। আইনের ধারাও প্রস্তুত করা হয়েছে।
ধারাগুলি ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত হয়ে গেছে। সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট বা সিএএ-র অধীনে নাগরিকত্বের আবেদন করার জন্য একটি অনলাইন পোর্টাল তৈরি হয়েছে। এই আইনের অধীনে নাগরিকত্বের আবেদন জানাতে গেলে আগে জানাতে হবে আবেদনকারী কত সালে তার বৈধ কাগজ ছাড়া ভারতে ঢুকেছিলেন। তাদের কাছ থেকে কোনও নথি চাওয়া হবে না।
যারা ২০১৪ সালের পরে আবেদন করেছেন, তাদের আবেদন নতুন নিয়ম অনুসারে বিচার করা হবে। মূল আইনে ভারতে প্রবেশের নির্ধারিত সময়সীমা- যা ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল, তা সম্ভবত বাড়ানো হবে।
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ সফরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, “আমি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিচ্ছি যে সিএএ দেশের আইন এবং কেউ এটিকে আটকাতে পারবে না। সবাই নাগরিকত্ব পাবেন। এটা আমাদের দলের অঙ্গীকার।”
সিএএ-এর আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে বেশ কিছু পিটিশন সুপ্রিম কোর্টে এখনও বিচারাধীন। গত বছর অক্টোবর মাসে এই আইনের পক্ষে কেন্দ্রীয় সরকার আদালতে একটি হলফনামা দাখিল করে জানায়, এই আইন সম্পূর্ণ বৈধ।