ভারতের উত্তরাখন্ডের উত্তরকাশীতে নির্মীয়মান টানেল দুর্ঘটনায় সুড়ঙ্গে আটকে থাকা ৪১ জন শ্রমিককে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উদ্ধারের আশা দেখতে পাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। তাদের উদ্ধারের মধ্যে বাধা ১২ মিটার পাথর ও ধ্বংসস্তুপ, যা সরিয়ে ফেললেই মুক্তি পাবেন উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে থাকা ৪১ জন শ্রমিক। বুধবার ২২ নভেম্বর এমনটাই জানিয়েছেন উত্তরাখণ্ডের প্রশাসনিক কর্তারা।
ধ্বংসস্তুপ সরানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে ড্রিল মেশিন আনা হয়েছে। উত্তরাখন্ডের রাজ্য প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের বার করে আনতে ২০ মিটারেরও কম পাথর এবং ধ্বংসাবশেষ সরানো বাকি রয়েছে।উত্তরাখণ্ড পর্যটন বিভাগের উচ্চ পদস্থ আধিকারিক ভাস্কর খুলবে জানিয়েছেন, ''আমি ঘোষণা করতে পেরে খুশি যে আমরা আরও ছয় মিটার এগিয়ে যেতে পেরেছি। আশা করছি আগামী দুই ঘন্টার মধ্যে আমরা পরবর্তী পর্যায়ের জন্য প্রস্তুতি নেব। এরপর অবশিষ্ট কাজ করতে পারব।'' উদ্ধারকাজের আর ৬৭ শতাংশ বাকি রয়েছে বলে জানান তিনি।
এর আগে উত্তরাখণ্ডের সড়ক ও পরিবহণ বিভাগের উচ্চপদস্থ আধিকারিক মাহমুদ আহমেদ জানিয়েছিলেন, বুধবার ২২ নভেম্বর ভারতীয় সময় দুপুর পৌনে ১টা নাগাদ সুড়ঙ্গের মুখে আটকে থাকা পাথর খনন করতে শুরু করে খননযন্ত্র অগার। বুধবার ভারতীয় সময় রাত সাড়ে ১১ টার মধ্যে 'বড় খবর' আসতে চলেছে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের আধিকারিকরা।
বুধবারও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা হয়েছে উদ্ধারকারী দলের। ৪১ জন শ্রমিক সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। তবে, শ্রমিকদের বাইরে আনার পরই প্রথমে তাদের চিকিৎসা সাহায্য দেওয়া হবে। যার জন্য সুড়ঙ্গের ঠিক বাইরেই জরুরী ভিত্তিতে একটি অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে। বিভিন্ন বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সেই হাসপাতালে ডেকে আনা হয়েছে। তৈরি রাখা হয়েছে লাইফ সাপোর্টের সুবিধা থাকা অ্যাম্বুল্যান্সও।
মঙ্গলবার ২১ নভেম্বর প্রথমবার প্রকাশ্যে এসেছিল সুড়ঙ্গের ভিতর আটকে থাকা শ্রমিকদের ভিডিও। তারা কী করছেন, কী ভাবে আছেন, দেখা গিয়েছিল ওই ভিডিওতে। রাতে একটি ৬ ইঞ্চির পাইপ লাইনের মাধ্যমে শ্রমিকদের কাছে গরম খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়। প্রতিনিয়ত ওয়াকি-টকির মাধ্যমে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
সিল্কইয়ারা এবং দণ্ডলগাঁওয়ের মাঝে তৈরি হচ্ছিল উত্তরকাশীর এই সুড়ঙ্গটি। সেখানেই আচমকা ১৫০ মিটার লম্বা এলাকা জুড়ে ধস নেমেছিল। এগারো দিন ধরে উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে রয়েছেন ৪১ জন শ্রমিক।