অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ঘুষ না পেয়ে এনসিবি অফিসারের হাতে গ্রেফতার হন শাহরুখ খান পুত্র: জানাল সিবিআই


২০২১ সালে অক্টোবরে ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা শাহরুখ খানের ছেলে আরিয়ান খান-সহ তাঁর ৬ বন্ধুকে মাদক মামলায় গ্রেফতার করেছিল ভারতের নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো তথা এনসিবি। মুম্বই থেকে গোয়াগামী প্রমোদতরীতে গ্রেফতার হয়েছিলেন আরিয়ান খান, আরমান মার্চেন্টরা। সেই অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন এনসিবি অফিসার সমীর ওয়াংখেড়ে। ২০২৩ সালে এসে সেই সমীরের বিরুদ্ধে এফআইআর করে সিবিআই লিখল, শাহরুখ খানের পরিবারের থেকে ২৫ কোটি টাকা ঘুষ না পেয়েই আরিয়ান-সহ বাকিদের ফাঁসিয়েছিলেন সমীর।

শাহরুখের ছেলে যখন জেল খাটছেন, তিনদিন-চারদিনের হেফাজত শেষে বারবার জামিন খারিজ হয়ে যাচ্ছে, শাহরুখ খান যখন তাঁদের বাংলো মন্নতে প্রায় গৃহবন্দি, সেই সময়ে এই গ্রেফতারির বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছিলেন মহারাষ্ট্রের তৎকালীন মন্ত্রী তথা এনসিপি নেতা নবাব মালিক। সমীর ওয়াংখেড়ের নাম করে নবাব বলেছিলেন, "এই অফিসারটি একেবারে নটোরিয়াস। ঘুষ না পেলেই সম্পন্ন বাড়ির ছেলেমেয়েদের মাদক মামলা দিয়ে জেলে ঢোকায়।"

বর্তমানে রাজনৈতিক জটিলতায় নবাব মালিক জেলে। কিন্তু সেদিন নবাব যা বলেছিলেন এদিন তা-ই বলল সিবিআই।

গত বছর এই সমীর ওয়াংখেড়েকে এনসিবি থেকে বদলি করে কর বিভাগে পাঠানো হয়। শনিবার থেকে সমীরের চেন্নাইয়ের বাড়িতে তল্লাশি চালায় সিবিআই। সেই অভিযানে অনেক কিছুর সঙ্গে উদ্ধার হয়েছে দু’টি মহার্ঘ বিদেশি ঘড়ি। যে ঘড়ি সম্পর্কে সিবিআই বলেছে, দেশের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিও হয়তো এই ঘড়ি কিনতে দু’বার ভাববেন।

সিবিআই এফআইআর-এ স্পষ্ট লিখেছে, শাহরুখের পরিবারের থেকে ২৫ কোটি টাকা চেয়েছিলেন সমীর। খোলাখুলিই বলা হয়েছিল, ওই টাকা না দিলে আরিয়ানের কেরিয়ার শেষ করে দেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় এজেন্সি এও বলেছে, শেষ পর্যন্ত ১৮ কোটি টাকায় রফা হয়। ৫০ লক্ষ টাকা অগ্রিমও নেন অন্য এক এনসিবি কর্তা। তারপর আরও টাকার জন্য আরিয়ানকে গ্রেফতার করেন ক্রুজ থেকে।

২১ দিন জেলে ছিলেন শাহরুখ-পুত্র। ইতিমধ্যে প্রমাণের অভাবে আরিয়ান খানকে বেকসুর খালাস করে দিয়েছে আদালত। তাঁর সঙ্গে মাদক মামলায় গ্রেফতার হওয়া বাকিরাও মুক্ত। তবে সমীর ওয়াংখেড়ের বাড়িতে আয় বহির্ভূত সম্পত্তি মামলায় সিবিআই তল্লাশির পর বিস্ফোরক এফআইআর-এর বয়ান জানা গেল।

পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, আরিয়ান যে একুশ দিন জেলে ছিলেন, সেই সময়ে নানান ধারণা তৈরির চেষ্টা হয়েছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনও নীতিপুলিশি শুরু হয়েছিল—শাহরুখ-গৌরী কত খারাপ বাবা-মা। যাঁরা নিজেদের সন্তানকেই শিক্ষা দিতে পারেননি। এতটাই ঘৃণা তৈরির উপাদান হাজির করা হয়েছিল যে একটি এডুকেশন অ্যাপ শাহরুখকে তাদের বিজ্ঞাপন থেকে সরিয়ে দিয়ে চুক্তি বাতিল করে।

পরে অবশ্য আদালত বলে, আরিয়ানদের কাছে যে মাদক ছিল তাঁর কোনও প্রমাণ এনসিবি আদলতে দিতে পারেনি। আজকে সিবিআই তাদের এফআইআরে বলল, ঘুষ না পেয়েই প্রতিহিংসা। যা সাংঘাতিক প্রবণতা বলে মত পর্যবেক্ষকদের।

XS
SM
MD
LG