রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতে আহত হবার পর ১০ বছরেও চাকরী হয়নি অর্থনীতিতে অনার্স-মাস্টার্স করা সাদ্দাম হোসেনের। ২০১৩ সালে তিনি নেসলে বাংলাদেশের সাভার ডিলার পয়েন্টে ডিএসআর পদে কাজ শুরু করেন। একই বছরের ২৪ এপ্রিল তার অফিস বিল্ডিংয়ের উপর রানা প্লাজা ভবনটি ধ্বসে পরে। অফিসে কর্মরত ২৩ জনের মধ্যে পাঁচ জনই মারা যায়। উদ্ধার অভিযানে হোসেনের জীবন বাঁচে, কিন্তু তিনি হারান তার ডান হাত।
অফিস থেকে এককালীন ৭৫,০০০ টাকা সহায়তা পেয়েছিলেন হোসেন। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের দেওয়া ফিক্সড ডিপোজিটের মুনাফা এবং টুকটাক এদিক সেদিক কাজ করে এখন সংসার চালাচ্ছেন তিনি। শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী কোন কাজ পাননি আজও।
দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া শ্রমিকদের মধ্যে ৫৪.৫ শতাংশ এখনো কর্মহীন আছেন, জানা যায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রিপোর্টে। রানা প্লাজা ট্রাজেডিতে মৃত ও বেঁচে যাওয়া ২০০ শ্রমিকদের পরিবারের মধ্যে অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের পক্ষে এ সমীক্ষাটি পরিচালনা করে ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল বিজনেস (আইএসবি)।
হোসেন এখন বাঁ হাতেই সবকিছু করতে পারেন, কম্পিউটারের কাজও করতে পারেন। মোটকথা, এক হাতেই তিনি সবকিছুর সাথে মানিয়ে নিতে চেষ্টা করছেন। ট্রাজেডির আগের বছর, ২০১২ সালে, বাপেক্সের সহকারি ব্যবস্থাপক পদে চাকুরীর আবেদন করেন হোসেন। ২০২২ সালের জুনে সেখান থেকে ‘কলিং কার্ড’ আসে। একই বছর ডিসেম্বরে রিটেন পরীক্ষা দেন হোসেন, প্রায় ২০-২২ হাজার চাকুরীপ্রার্থীর সাথে। “এতগুলা ছাত্রছাত্রীর মাঝে আমি যে ভাইভা কার্ড পাবো, আমার এটার (জন্য) খুব দুশ্চিন্তা লাগে,” ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন তিনি। রানা প্লাজা ট্রাজেডিকে ‘ভাগ্যের নির্মম পরিণতি ’ মনে করেন না হোসেন। মামলার প্রধান আসামী ভবন মালিক সাবেক যুবলীগ নেতা সোহেল রানা সহ সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তিনি, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটানোর চিন্তাও কেউ না করতে পারে।