অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

র‍্যাব হেফাজতে মারা যাওয়া জেসমিনের কথিত সহযোগী আল আমিন গ্রেপ্তার


আল আমিন
আল আমিন

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার প্রধান অভিযুক্ত আল আমিনকে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) গ্রেপ্তার করেছে। বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) র‌্যাব ৩–এর সিনিয়র এএসপি (মিডিয়া) ফারজানা হক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব ৩–এর একটি দল বুধবার ঢাকার শাহজাহানপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. আল আমিনকে (৩২) গ্রেপ্তার করে।

র‌্যাব জানায়, নওগাঁ ভূমি অফিসের সহকারী সুলতানা জেসমিনের একজন সহায়ক এই আল আমিন।

র‌্যাবের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, “আল আমিন ও তাঁর দলের সদস্যরা রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে কর্মরত যুগ্মসচিব মো. এনামুল হকের একটি ভুয়া ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে বেকার যুবকদের সরকারি চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন”।

এতে বলা হয়, পরে ওই কর্মকর্তা বিষয়টি জানতে পারলে তিনি আল আমিন ও তাঁর সহযোগী সুলতানা জেসমিনের বিরুদ্ধে রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আল আমিন জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মামলা দায়েরের পর থেকে গ্রেপ্তার অভিযুক্তকে গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হয় এবং এক পর্যায়ে তিনি র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন।

আল আমিনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই চক্রের অন্য সহযোগীদের গ্রেপ্তারে র‌্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

র‌্যাবের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, আল আমিন একজন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের এজেন্ট। তিনি উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে জালিয়াতি করে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করার জন্য একটি গ্রুপের সঙ্গে কাজ করছেন।

উল্লেখ্য, সুলতানা জেসমিনকে গত ২২ মার্চ র‍্যাব গ্রেপ্তার করে। র‍্যাবের হেফাজতে থাকা অবস্থায় ২৪ মার্চ জেসমিন মারা যান।

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ও র‌্যাব

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‍্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট ও পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়। এই কর্মকর্তাদের মধ্যে র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান আইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) তোফায়েল মোস্তাফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. আনোয়ার লতিফ খানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথক এক ঘোষণায় বেনজীর আহমেদ এবং র‍্যাব ৭–এর সাবেক অধিনায়ক মিফতাহ উদ্দীন আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), মাদক দ্রব্যের বিরুদ্ধে সরকারের লড়াইয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত। এতে বলা হয়েছে যে, তারা আইনের শাসন, মানবাধিকারের মর্যাদা ও মৌলিক স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে ক্ষুণ্ন করে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থের বিরুদ্ধে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। র‍্যাব হচ্ছে ২০০৪ সালে গঠিত একটি সম্মিলিত টাস্ক ফোর্স। তাদের কাজের মধ্যে রয়েছে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অপরাধীদের কর্মকান্ড সম্পর্কে গোপন তথ্য সংগ্রহ এবং সরকারের নির্দেশে তদন্ত পরিচালনা করা।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বা এনজিওদের অভিযোগ হচ্ছে যে, র‍্যাব ও বাংলাদেশের অন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ২০০৯ সাল থেকে ৬০০ ব্যক্তির গুম হয়ে যাওয়া এবং ২০১৮ সাল থেকে বিচার বহির্ভূত হত্যা ও নির্যাতনের জন্য দায়ী। কোনো কোনো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, এই সব ঘটনার শিকার হচ্ছে বিরোধী দলের সদস্য, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীরা।

XS
SM
MD
LG