ভারতে শুক্রবার এক উগ্র হিন্দু নেতাকে জনসমক্ষে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তিনি তার বিশ্বাসের প্রতীক মূর্তির কথিত অবমাননার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন বলে স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে।
সুধীর সুরি নামে ৫৮ বছর বয়সী মৌলবাদী ধর্মীয় গোষ্ঠী হিন্দু শিবসেনার ওই নেতাকে অমৃতসরে হত্যা করা হয়। ঐ শহরেই শিখ ধর্মের পবিত্রতম উপাসনালয় স্বর্ণ মন্দির অবস্থিত।
শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা অরুণ পাল সিং বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, "আততায়ী ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে সম্পূর্ণ জনসমক্ষে গুলি করে হত্যা করে।" তিনি বলেন, সুরিকে বেশ কয়েকবার গুলি করা হয়েছে।
ঘটনাস্থল থেকে হামলাকারীকে আটক করা হয়েছে এবং তার কাছে লাইসেন্সকৃত অস্ত্র ছিল বলে তিনি জানান।
২০২০ সালে, ভারতে এবং বিদেশে শিখ সম্প্রদায়ের ক্ষুব্ধ সদস্যরা অভিযোগ করে, সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে শেয়ার করা এক ভিডিওতে সুরি মহিলাদের এবং তাদের বিশ্বাসের অবমাননা করেছে, সে সময় সুরিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জুলাই মাসে একই ধরনের অভিযোগে তাকে আবারও গ্রেপ্তার করা হয়।
অমৃতসরে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ধর্মীয়ভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হত্যাকাণ্ডের বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে।
গত সেপ্টেম্বরে, স্বর্ণ মন্দিরের কাছে মাতাল হবার এবং তামাক সেবন করে অভিযোগে এক যুবককে জনসমক্ষে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের জন্য একটি উগ্র মৌলবাদী শিখ যোদ্ধা সম্প্রদায়ের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মন্দিরগুলির সুরক্ষা শিখ ধর্মের জন্য একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয় এবং পবিত্র মাটিতে তামাক, মদ কিংবা যে কোনো রকম মাদক সেবনকে অবমাননা হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
এর আগে, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নির্মুল করার জন্য তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী স্বর্ণ মন্দিরে নৃশংস সেনা হামলার নির্দেশ দিলে, ১৯৮৪ সালে তাঁর শিখ দেহরক্ষীরা তাঁকে হত্যা করে।
তাঁর হত্যার প্রতিক্রিয়ায়, রাজধানী নয়াদিল্লিতে এক রক্তক্ষয়ী গণহত্যা শুরু হয়, এবং প্রায় তিন হাজার শিখ এতে মারা যায়।