তালিবান শাসকদের দখলে থাকা আফগানিস্তান থেকে অবশেষে ফেরত এসেছেন বাংলাদেশের নয় জন নাগরিক। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক ও জার্মানির একটি সংস্থায় কাজ করতেন তারা। এর মাঝে ব্র্যাকে কর্মরত তিনজন গতকাল পাকিস্তান হয়ে ঢাকায় ফিরেছেন।
অন্যদিকে, কাবুল ত্যাগ করে স্পেনের আমেরিকান ঘাঁটিতে আশ্রয় পাওয়া বাংলাদেশের ৬ জন নাগরিক ফিরেছেন আজ বুধবার। টার্কিশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে তারা ঢাকায় পৌঁছেন। এই ছয়জন বাংলাদেশি কাজ করতেন আফগানিস্তানে জার্মানির একটি সংস্থায়।
তালিবানের হাতে কাবুলের পতনের সময় তারা সেখানে অবস্থান করছিলেন এক অনিশ্চিত যাত্রায়। যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী তাদের উদ্ধার করে সৌদি আরবের রিয়াদে নিয়ে যায় ২৮শে আগস্ট। এরপর রিয়াদ থেকে এই ৬ জনকে সামরিক বিমানে করে ৩০শে আগস্ট নেওয়া হয় স্পেনের রোটা মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে। এরপর তারা রোটা মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে অবস্থান করছিলেন। দেশে ফেরার জন্য বাংলাদেশ দূতাবাসের সহায়তা চান। মাদ্রিদের বাংলাদেশ দূতাবাস এই বিষয়ে স্পেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, আমেরিকান দূতাবাস ও রোটা বিমান ঘাঁটির ইউএস কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে। সবার সহযোগিতা নিয়ে আজ সেই ৬ জন মালাগা থেকে ঢাকা ফিরেছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে সামস যিনি আফগানিস্তানে আটকে পড়া বাংলাদেশের নাগরিকদের সঙ্গে যোগাযোগের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি বলেন, সব মিলিয়ে আফগানিস্তানে মোট ৩০ বাংলাদেশি ছিলেন। তাদের মধ্যে ২৩ জন দেশে ফিরেছেন। বাকি সাতজন স্বেচ্ছায় আফগানিস্তানে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পরবর্তীতে তারা ফেরত আসতে চাইলে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক গত ১৯ বছর ধরে আফগানিস্তানে কাজ করে আসছে। এ প্রতিষ্ঠানটি মানবিক সহায়তায় কাজ করে থাকে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে আফগানিস্তানে কাজ করত। করোনাকালে তাদের মানবিক সেবা প্রশংসা অর্জন করেছে । ব্র্যাকের তিন হাজার কর্মীর মধ্যে ১৪ জন বিদেশি নাগরিক ছিলেন। তাদের মধ্যে থেকে সর্বশেষ বাংলাদেশের তিন জন নাগরিককে ফেরত আনা হলো। ২০১২ সালে উগ্রপন্থিরা আফগানিস্তানে ব্র্যাক অফিসে হামলা করে একজনকে হত্যা করে। গুলিতে নিহত ব্র্যাককর্মী ছিলেন বাংলাদেশের নাগরিক।