হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেন্সকির শুক্রবারের (২৮ ফেব্রুয়ারি) দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এক পর্যায়ে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এরই জের ধরে ট্রাম্প অভিযোগ করেন যে জেলেন্সকি অসম্মানজনক আচরণ করেছেন এবং তাদের পূর্বনির্ধারিত যৌথ সংবাদ সম্মেলন বাতিল হয়ে যায়।
৪৫ মিনিট ব্যাপী বৈঠকের শেষ ১০ মিনিট ট্রাম্প, ভ্যান্স ও জেলেন্সকির মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। জেলেন্সকি বিশ্ব মঞ্চে বহু বছর ধরে মস্কোর প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের দৃষ্টান্ত তুলে কূটনীতিতে রাশিয়ার প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করেন।
বাক্য বিনিময়টি শুরু হয় যখন ভ্যান্স, জেলেন্সকিকে বলেন, “মি প্রেসিডেন্ট, সম্মানের সঙ্গেই বলছি, আমি মনে করি ওভাল অফিসে এসে আমেরিকান মিডিয়ার সামনে আপনার এই অভিযোগ তোলা অসম্মানজনক।"
জেলেন্সকি এতে আপত্তি জানানোর চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেন, “আপনি লক্ষ লক্ষ লোকের জীবন নিয়ে বাজি খেলছেন”।
ট্রাম্প বলেন, “আপনি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে বাজি ধরছেন এবং আপনি যা করছেন তা দেশটির জন্য, এই দেশটির জন্য অসম্মানজনক, যে দেশটি আপনাদের এতটাই সমর্থন দিয়েছে যা অনেকের মতে তাদের চাইতে অনেক বেশি”।
বৈঠকের পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এর এক পোস্টে লিখেছেন, "আমরা আজ হোয়াইট হাউসে একটি খুব অর্থপূর্ণ বৈঠক করেছি। এমন চাপের মুখে আলাপ-আলোচনা ছাড়া অনেক কিছু বোঝা যায় না। আবেগের মাধ্যমে আশ্চর্যজনক সব বিষয় বেরিয়ে আসে...এবং আমি নির্ধারণ করেছি যে আমেরিকা জড়িত থাকলে প্রেসিডেন্ট জেলেন্সকি শান্তির জন্য প্রস্তুত নন, কারণ তিনি মনে করেন আমাদের সম্পৃক্ততা তাকে আলোচনায় একটি বড় সুবিধা দেয়। আমি সুবিধা চাই না, শান্তি চাই। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহ্যবাহী ওভাল অফিসকে অসম্মান করেছেন। শান্তির জন্য প্রস্তুত হলে তিনি ফিরে আসতে পারেন।"
এর আগে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বুধবার বলেন যে তিনি এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন যার ফলে যুক্তরাষ্ট্র কিয়েভের লাভজনক ‘রেয়ার আর্থ’ খনিজের উপর বস্তুত অধিকার পাবে যা কিনা রাশিয়ার সঙ্গে তিন বছর ব্যাপী যুদ্ধে ওয়াশিংটন ইউক্রেনকে যে অস্ত্র পাঠিয়েছিলে তার মূল্য পুষিয়ে নেবে।
ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার এই নতুন মেয়াদের প্রথম মন্ত্রীসভার বৈঠকে বলেন যে এই চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য এবং যুদ্ধের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য জেলেন্সকি শুক্রবার হোয়াইট হাউসে আসছেন।
তবে, এই উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পর সেই চুক্তি স্বাক্ষর হয়নি।