চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে ফের সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন পুলিশের ৪০তম ব্যাচের অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষানবিস উপ-পরিদর্শকরা (এসআই)।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল ১০টার পর থেকে আব্দুল গনি রোডে সচিবালয়ের এক ও দুই নম্বর গেটের বিপরীতে অবস্থান নেন তারা।
এর আগে প্রশিক্ষণ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রতিবাদ ও চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে গত ৫ ও ৬ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন তারা।
অব্যাহতি পাওয়া এসআইরা বলেন, “তখন স্বরাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে দেখা করতে যান আমাদের একটি প্রতিনিধি দল। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন সচিব। এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। যে কারণে আমরা সবাই আজ আবার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি।”
সচিবালয়ের সামনে ৩২১ জন দাঁড়িয়েছিলেন সোমবার, তারা জানিয়েছেন সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অব্যাহতি পাওয়া একজন এসআই বলেন, "২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর ট্রেনিংয়ে অংশ নিই। আমাকে অব্যাহতি দেওয়া হয় ২০২৪ সালের ৪ নভেম্বর। আমাকে বলা হচ্ছে ক্লাসে অমনোযোগী এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী। কিন্তু আমি অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষায় ৮০৪ জনে ১০০ জনের মধ্যে ছিলাম। অমনোযোগী থাকলে তো এমন ফল হওয়ার কথা না।"
আরেকজন বলেন, "আমরা এক বছর অনেক ত্যাগ স্বীকার করে প্রায় বিনা বেতনে ট্রেনিং করেছি। যখন চাকরিতে নিয়মিত হওয়ার কথা, তখনই আমাদের বাদ দেওয়া হলো। তুচ্ছ অভিযোগে আমাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পুলিশ একাডেমি সারদার ইতিহাসে একসঙ্গে এত মানুষের অব্যাহতি দেওয়ার ঘটনা নজিরবিহীন।"
পুলিশের ৪০তম ক্যাডেট এসআই ব্যাচে ৮৫৭ জন সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ সূত্র। এর মধ্যে ৮২৩ জন এসআই সদস্য চাকরিতে যোগদান করেন।
অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন দফায় "শৃঙ্খলাভঙ্গের" অভিযোগ এনে তিনশোরও বেশি এসআই নিয়োগপ্রাপ্তদের অব্যাহতি দিয়েছে, অক্টোবরের শেষ দিকে ২৫০ জন এরপর নভেম্বর মাসে আরও ৫৮ জনকে সারদার পুলিশ একাডেমী থেকে চাকরীচ্যুত করা হয়েছে।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পুলিশ প্রশাসনে সংস্কারের ক্রমবর্ধমান দাবির মধ্যে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
রাজনৈতিক রূপান্তরের প্রভাব এড়িয়ে পুলিশ সংস্কারকে জাতীয় এজেন্ডা করে আইন প্রয়োগের উন্নতির আহ্বান একটি গুরুত্বপূর্ণ দাবিতে পরিণত হয়েছে।
যদিও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ২২ অক্টোবর সাংবাদিকদের বলেন, "রাজনৈতিক পরিচয় নয়, শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়েই এই পুলিশদের চাকরি গিয়েছে"।