অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবার উপর ভ্যাট না কমালে এনবিআর ঘেরাও করার হুমকি


জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের নেতাদের মানববন্ধন কর্মসূচি। ১২ জানুয়ারি, ২০২৫।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের নেতাদের মানববন্ধন কর্মসূচি। ১২ জানুয়ারি, ২০২৫।

মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সেবায় নতুন করে আরোপিত ভ্যাট প্রত্যাহার করা না হলে এনবিআর ঘেরাওসহ কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের নেতারা।

রবিবার (১২ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এই হুঁশিয়ারি দেন তারা।

“আগামী সপ্তাহের মধ্যে যদি এই ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা হয় তাহলে আমরা গ্রাহক এবং সেবা খাতের সবাইকে নিয়ে এনবিআর কার্যালয় ঘেরাও করব, ” বলেন বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম ও আইআইজির সভাপতি আমিনুল হাকিম।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে হাকিম বলেন যে, নতুন ভ্যাট এই খাত ধ্বংস করে দিতে পারে।

“এই সেবা খাত ধ্বংস করার অপচেষ্টা আগেও করা হয়েছে এখন আবার নতুন করে ১০ শতাংশ এসডি ও ভ্যাট যুক্ত করায় গ্রাহকের ভোগান্তি বাড়বে। একইভাবে এই সেবাখাত ধ্বংস হয়ে যাবে, ” তিনি বলেন।

গত বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) মোবাইল ফোনের সিমকার্ডের ওপর ভ্যাট ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ২৩ শতাংশ এবং প্রথমবারের মতো সম্পূরক শুল্ক বসেছে ইন্টারনেট সেবা বা আইএসপির ওপর। এ ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক দিতে হবে।

মূসক ও সম্পূরক শুল্ক (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫ এবং দ্য এক্সাইজ অ্যান্ড সল্ট (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫, সরকার এ দুটি অধ্যাদেশ প্রকাশের পর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট বিভাগ এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে।

আইএসপিএবি’র সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, “আমাদের ছোট ছোট উদ্যোক্তা যেভাবে হুমকির মুখে পড়বে ঠিক একইভাবে গ্রাহকদের উপর অতিরিক্ত করের বোঝার চাপ পড়বে। ফোনে ইন্টারনেট সেবা বিমুখ হবে জনগণ, যা নতুন করে বৈষম্য তৈরি করবে।”

বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সাবেক পরিচালক খালিদ আবু নাসের, তাঁর ভাষায়, "হঠকারী সিদ্ধান্ত" দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেন, “নতুন করে করের বোঝা জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলবে না, সরকারকে ১০ নম্বর সংকেতে ফেলবে।"

প্রযুক্তিবিদ ও প্রযুক্তি শিল্প উদ্যোক্তা বেসিসের সাবেক সভাপতি ফাহিম মাশরুর কোন আলোচনা ছাড়াই নতুন করে ইন্টারনেট সেবার উপর কর আরোপ করার সিদ্ধান্ত এক ধরনের "স্বৈরাতান্ত্রিক আচরণ" হিসেবে বর্ণনা করেন।

"নতুন করে কর বৃদ্ধি করলে টেলিযোগাযোগ ইন্টারনেট সেবা খাত হুমকির মুখে পড়বে। নতুন উদ্যোক্তা তৈরি তো দূরে থাক, গ্রাহকরা এই সেবা গ্রহণ করতে পারবে না। এতে নতুন করে কর আদায় করার যে সিদ্ধান্ত, তা হোঁচট খাবে,” মাশরুর বলেন।

সভাপতির বক্তব্যে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, “দুর্নীতিবাজ রাজস্ব কর্মকর্তাদের খুশি করতেই তাদের পরামর্শে এই ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।”

"গ্রাহকদের স্বার্থ বিবেচনা না করে কারো সঙ্গে আলোচনা না করেই রাতের আঁধারে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে জনগণের সঙ্গে নতুন করে বৈষম্য সৃষ্টি করল," তিনি বলেন।

সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করলে কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

XS
SM
MD
LG