গাজার হাসপাতাল কর্মীরা বলেছেন, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ও শুক্রবার সকালে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় শিশুসহ কমপক্ষে ৩০ জন নিহত হয়েছে। গোটা ইসরায়েলে সাইরেন বেজেছে। যুদ্ধবিরতি নিয়ে স্থগিত হওয়া আলোচনা পুনরায় শুরু হতে চলেছে।
আল আকসা শহিদ হাসপাতালের কর্মীরা বলেছেন, নুসেইরাত, জাওয়াইদা, মাঘাজি ও দেইর আল বালাহ-সহ গাজার মধ্যাঞ্চলে বিভিন্ন স্থানে হামলার ফলে এক ডজনের বেশি নারী ও শিশু নিহত হয়েছে। আগের দিন এই ছিটমহল জুড়ে কয়েক ডজন মানুষ প্রাণ হারিয়েছে; ফলত গত ২৪ ঘন্টায় মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৬ জনে।
সর্বশেষ হামলা নিয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী কোনও মন্তব্য করেনি। তবে, শুক্রবার এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, গাজা জুড়ে হামাসের কয়েক ডজন জমায়েত ঘাঁটি, কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে তারা আঘাত হেনেছে। সেনাবাহিনী আরও বলেছে, বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতি কমাতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে যেমন নির্দিষ্ট লক্ষ্যভেদী অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে ও আকাশপথে নজরদারি চালানো হয়েছে।
হামাসের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের উপর ও ইসরায়েল কর্তৃক ঘোষিত মানবিক জোনে বৃহস্পতিবার হামলা করা হয়েছে। শুক্রবার ভোরে নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ওমর আল-দেরাই। হাসপাতালে তার মৃতদেহ ঘিরে তার বন্ধু ও সহকর্মীদের শোক প্রকাশ করতে দেখেছেন অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের সংবাদদাতারা। ওমরের কাফনের উপর তার সাংবাদিক ভেস্ট রাখা ছিল।
শুক্রবার গাজার মধ্যাঞ্চলে এক এলাকা অবিলম্বে খালি করতে ইসরায়েল নতুন করে সতর্কতা জারি করেছে; বলা হয়েছে, ইসরায়েলের দিকে সেখান থেকে অস্ত্র নিক্ষেপ করায় তারা এই এলাকায় হামলা করতে চলেছে।
ইসরায়েলিরাও শুক্রবার ভোরে হামলার জেরে জেগে উঠেছিলেন। ইসরায়েল বলেছে, ইয়েমেন থেকে তাদের দেশে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে যার ফলে জেরুজালেম ও ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে বিমান হানা বিষয়ে সতর্ক করতে সাইরেন বেজে ওঠে এবং নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে মানুষেরা ঠেলাঠেলি ও হামাগুড়ি দিয়ে অগ্রসর হন। আহত বা ক্ষয়ক্ষতির তাৎক্ষণিক কোনও খবর নেই; যদিও জেরুজালেমে মৃদু বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এই আওয়াজ ক্ষেপণাস্ত্র বা ইন্টারসেপ্টর থেকে আসতে পারে। ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছেন, একটি ক্ষেপণাস্ত্রকে প্রতিহত করা হয়েছে।
এই হামলার মধ্যেই যুদ্ধবিরতি নিয়ে সমঝোতার প্রচেষ্টা শুক্রবার পুনরায় শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দফতর জানিয়েছে, কাতারে সমঝোতা আলোচনা অব্যাহত রাখতে তিনি মোসাদ গোয়েন্দা সংস্থা, শিন বেত অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা ও সামরিক বাহিনী থেকে একটি প্রতিনিধি দলকে অনুমতি দিয়েছেন। এই প্রতিনিধি দল শুক্রবার কাতারে রওনা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।