আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূসের বক্তব্যকে 'অস্পষ্ট ও হতাশাজনক' বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্যে নির্বাচনসংক্রান্ত বার্তা অস্পষ্ট।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমরা আশা করেছিলাম প্রধান উপদেষ্টা একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে নির্বাচনের জন্য একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ উপস্থাপন করবেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। এটা আমাদের জন্য যেমন হতাশাজনক, তেমনি জাতির জন্যও হতাশাজনক।”
মির্জা ফখরুল বলেন, যেহেতু নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে গঠিত হয়েছে, সেহেতু নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি শুরু করতে তাদের কোনো সমস্যা নেই। “খুব তাড়াতাড়ি এটা করা সম্ভব।”
নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ও তার প্রেস সচিব যে 'পরস্পরবিরোধী বক্তব্য' দিয়েছেন তা নির্বাচনসংক্রান্ত সরকারের সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য
১৬ ডিসেম্বর (সোমবার) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “তবে রাজনৈতিক ঐকমত্যের কারণে আমাদেরকে যদি, আবার বলছি ‘যদি’ অল্প কিছু সংস্কার করে ভোটার তালিকা নির্ভুলভাবে তৈরি করার ভিত্তিতে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হয়, তাহলে ২০২৫ সালের শেষের দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠান হয়তো সম্ভব হবে। আর যদি এর সঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে এবং জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রত্যাশিত মাত্রার সংস্কার যোগ করি তাহলে আরও অন্তত ৬ মাস অতিরিক্ত সময় লাগতে পারে। মোটাদাগে বলা যায়, ২০২৫ সালের শেষ দিক থেকে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করা যায়।”
পরদিন মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) তাঁর প্রেস সচিব শফিকুল আলম ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে বলেন, “সংস্কার ও নির্বাচন আয়োজন নিয়ে সরকার কাজ করছে। নির্বাচনী রোডম্যাপ খুব স্পষ্ট দেয়া হয়েছে। চূড়ান্ত তারিখ কী? সেটা নির্ভর করবে সংস্কারের ওপর। প্রধান উপদেষ্টা একটা সময় দিয়ে দিয়েছেন। এর চেয়ে পরিষ্কার রোডম্যাপ কী হতে পারে? আপনি আশা করতে পারেন ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। এখন আপনি যদি বলেন মনোনয়ন দাখিলের সময় কবে? সেটা নির্বাচন কমিশন দেবে।”