অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর কেমন আছে বাংলাদেশ, এ নিয়ে কী ভাবছেন দেশের নাগরিকরা, এ বিষয়ে অক্টোবরের ১৩ থেকে ২৭ তারিখ, ভয়েস অফ আমেরিকা দেশব্যাপী একটি জরিপ করে।
এ জরিপটির ফলাফল সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে।
জরিপের ফলাফল নিয়ে অংশীজনদের মন্তব্য ও বিশ্লেষণ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছে ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা।
মতিউর রহমান চৌধুরী
প্রধান সম্পাদক, দৈনিক মানবজমিন
ভয়েস অফ আমেরিকা: অন্তর্বতী সরকারের অধীনে মত প্রকাশের স্বাধীনতা, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ আমলের চেয়ে বেড়েছে বলে মনে করেন ৬০ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ এবং এই আমলে গণমাধ্যমগুলো আওয়ামী লীগ আমলের চেয়ে বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে বলে মত ৬১ দশমিক ২ শতাংশ মানুষের। এ দুটি বিষয়ে আপনার মন্তব্য জানতে চাচ্ছি।
মতিউর রহমান চৌধুরী: অন্তবর্তীকালীন সরকারের সময়ে সংবাদমাধ্যম অনেক স্বাধীনতা ভোগ করছে। এটা আগে কখনো ছিল না। এখানে কেউ আমাদের ফোন করে না। কেউ এসে বলে না যে, এই খবর দেওয়া যাবে, এই খবর দেওয়া যাবে না। এটা বন্ধ হয়েছে। আগের জামানায় তো সবাই জানেন কি পরিস্থিতি ছিল। তারা সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করতো। অনেক খবরই দেওয়া যেতো না। এজেন্সির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হতো সব কিছু।
আমার নিজের কথা বলি- আমি ৮ মাস বাইরে ছিলাম, দেশে ফিরতে পারিনি শেখ হাসিনার জামানায়। ৫ আগষ্টের আগে ২ আগষ্ট আমাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল। আমার তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে, আমি দেখেছি। তাদের মধ্যে কোনও টলারেন্সই ছিল না।
এখনো যে সব সেল্ফ সেন্সরশিপ চলে গেছে সেটা আমি আমি বললো না। কিছু সেল্ফ সেন্সরশিপ এখনো আছে। তার কারণ আমরা নিজেরাই চিন্তা করি- এটা দেওয়া মনে হয় ঠিক হবে না। দিলে কি হবে, কোন প্রতিক্রিয়া হবে- এইসব ভেবে। আমি মনে করি জরিপে যারা মত দিয়েছেন ঠিকই মত দিয়েছেন। আসলেই স্বাধীনতা অনেক বেড়েছে।
তবে আমাদের মধ্যে কিছু হঠকারীতাও আছে। আমরা অনেক খবর আমরা দিচ্ছি যেটা না দিলেও চলে। (আবার) অনেক খবর আসলে ইচ্ছা করলেই দেওয়া যায় না। এই স্যোশাল মিডিয়ার যুগে নিউজ পেপার বলেন, টেলিভিশন বলেন, রেডিও বলেন এখানে একটা বর্ডারলাইন তো থাকতেই হবে। থাকার দরকার আছে।
বিশেষ করে এই মুহুর্তে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন যেটা ছিল এই আইনটা তো বাতিল হতে যাচ্ছে। এই আইনে আমি নিজেও মামলা খেয়েছি। কোনও কিছুই স্বাধীনভাবে লেখা যেতো না। আইনের বেড়াজালেই আমরা আটকা ছিলাম। এই সরকার (অন্তবর্তী সরকার) বলেছে তারা আইনগুলো বাতিল করবে এবং কিছু উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। আমি মনে করি- এটা একটা ভালো দিক। আমরা যদি এটা ধরে রাখতে পারি তাহলে আগামী দিনে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ব্যাপক, অবাধ স্বাধীনতা ভোগ করতে পারবে।
(এই সাক্ষাৎকার নিয়েছেন হাসিবুল হাসান।)