ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করে দাবী করেছে যে তারা “নিরাপত্তাহীন পরিবেশের” মুখোমুখি হয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, কংগ্রেস বুধবার (২৭ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে “সংখ্যালঘুদের জান-মাল রক্ষা করার” লক্ষে বাংলাদেশ সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
বাংলাদেশে সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের একজন নেতা, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার জামিন নামঞ্জুর করার পর কংগ্রেসের মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের সভাপতি পাওয়ান খেরা এই বিবৃতি দেন।
“বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা যে নিরাপত্তাহীন পরিবেশের মুখোমুখি হয়েছে, তা নিয়ে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। ইসকন পুরোহিতের গ্রেফতার তার সর্ব সাম্প্রতিক উদাহরণ,” খেরাকে উদ্ধৃত করে দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া জানায়।
দক্ষিণ ভারতের হায়দ্রাবাদ-ভিত্তিক দ্য হান্স ইন্ডিয়া পত্রিকায় বলা হয়, ইসকন পুরোহিতের গ্রেফতার “ভারতে এবং বহির্বিশ্বে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে”, যার প্রেক্ষিতে কংগ্রেসের এই বিবৃতি।
পত্রিকা জানায়, কংগ্রেস ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক যোগাযোগের উপর জোর দিয়েছে।
“কংগ্রেস প্রত্যাশা করে যে, সংখ্যালঘুদের জান ও মাল রক্ষার লক্ষে বাংলাদেশ সরকার যাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়, তা নিশ্চিত করার জন্য ভারত সরকার তাদের উপর প্রভাব ফেলবে,” পাওয়ান খেরাকে উদ্ধৃত করে দ্য হান্স ইন্ডিয়া জানায়।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে সোমবার ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার চট্টগ্রামের এক আদালত জামিন নামঞ্জুর করলে ইসকন সমর্থকরা আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। পুলিশ লাঠি চার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
তবে সংঘর্ষের সময় একদল লোক সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) সাইফুল ইসলামকে আদালতের কাছেই কুপিয়ে হত্যা করে।
ঢাকা-দিল্লি বিবৃতি
মঙ্গলবার চিন্ময় দাসের গ্রেফতারের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দেয় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ।
"সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় অপরাধীরা যেখানে ধরা ছোঁয়ার বাইরে, সেখানে একজন ধর্মীয় নেতা এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে যখন কথা বলেছে, তখন তার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ এনে গ্রেফতার করা হয়েছে," ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলে।
তবে বাংলাদেশ সরকার ভারতের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলে,বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি বিরাজ করছে।
“বাংলাদেশ সরকার চরম হতাশা এবং গভীর বেদনার সাথে লক্ষ্য করছে যে, কোন বিশেষ মহল শ্রী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছে,কারণ শ্রী চিন্ময় দাসকে সুনির্দিষ্ট চার্জ-এর ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছ,” ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়।
তবে “সুনির্দিষ্ট” অভিযোগ কী ছিল বা পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেছে কিনা, বিবৃতিতে তা বলা হয়নি।