জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় এবং পৃথিবী ও মানুষের জন্য কল্যাণকর নতুন সভ্যতা গড়ার প্রচেষ্টায় বিশ্বের একটি নতুন অর্থনৈতিক কাঠামো দরকার বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে এলডিসি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে কপ-২৯ সম্মেলনের সাইডলাইনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
রুদ্ধদ্বার বৈঠকে পাঁচটি প্রধান জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ স্বল্পোন্নত দেশ- নেপাল, মালাউই, গাম্বিয়া, লাইবেরিয়া ও বাংলাদেশের নেতারা যোগ দেন।
এ সময় মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “আমাদের একটি নতুন অর্থনৈতিক কাঠামো দরকার, যা পৃথিবী এবং এর মানুষের জন্য কল্যাণকর।”
একইসঙ্গে বিশ্বের তরুণদের জন্য একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা তৈরির লক্ষ্যে জাতিসংঘের পৃষ্ঠপোষকে হওয়া সম্মেলন ‘সামিট ফর দ্য ফিউচার’–কে সমর্থন জানান তিনি।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “আমরা এমন অর্থনৈতিক কাঠামো তৈরি করেছি যার মূল হচ্ছে ভোগ, ভোগ এবং শুধুই ভোগ। আর এটি শুধু বর্জ্য, বর্জ্য এবং বর্জ্যই তৈরি করে। আমাদেরকে শূন্য বর্জ্যের বিশ্ব তৈরি করতে হবে।”
প্রতি বছর কপ জলবায়ু সম্মেলন করা উচিত নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বিশ্বের কী প্রয়োজন তা আমরা জানি এবং এর জন্য আমাদের একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করা উচিত। এটি দেশ অনুযায়ী হওয়া উচিত। আমাদের দীর্ঘমেয়াদি (বর্জ্য) নিরসনের জন্য পরিকল্পনা করতে হবে।”
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “আমাদের প্রতি বছর এখানে দেখা করার দরকার নেই। প্রতি বছর আলোচনার জন্য মিটিং করা সময়সাপেক্ষ, অর্থের অপচয় এবং একইসঙ্গে অপমানজনক।”
জলবায়ু আলোচনার বর্তমান পদ্ধতিটি বিশ্বের বেশির ভাগ চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে একটি নতুন পদ্ধতির আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে স্বল্পোন্নত দেশগুলো সবচেয়ে বড় অবিচারের সম্মুখীন হয়েছে। আমরা আপনাদের বলতে চাই যে, আমরা আপনাদের বিষয়ে গুরুত্ব দিই।”
জলবায়ু অভিযোজন ও প্রশমনের জন্য একটি বৃহত্তর তহবিল সুরক্ষিত করার জন্য এলডিসিগুলোকে কঠোর আলোচনা এবং ‘গুরুতর প্রক্রিয়া’ তৈরির তাগিদ দেন তিনি।