হত্যাচেষ্টার এক মামলায় অভিনেত্রী শমী কায়সার ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল গানবাংলার চেয়ারম্যান কৌশিক হোসেন তাপসকে তিন দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছে আদালত।
বুধবার (৬ নভেম্বর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুজজামানের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ১৮ জুলাই ইশতিয়াক মাহমুদ নামের এক ব্যবসায়ীকে হত্যার চেষ্টা হয়। এ ঘটনায় ২৯ সেপ্টেম্বর উত্তরা পূর্ব থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা হয়। এ মামলায় শমী কায়সার ও কৌশিক হোসেন তাপসের নাম রয়েছে। এ মামলায় গ্রেফতার এই দুজনকে বুধবার আদালতে হাজির করে সাত দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করে পুলিশ।
রিমান্ডের সপক্ষে আদালতে যুক্তি তুলে ধরেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী। অন্যদিকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদনের বিরোধিতা করে আদালতে যুক্তি তুলে ধরেন অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবীরা।
শমী কায়সার আদালতে বলেন, “আমি কোনো ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নই। আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য মামলা দেওয়া হয়েছে।” আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চান শমী কায়সার।
অন্যদিকে কৌশিক হোসেন তাপস আদালতে বলেন, তিনি হয়রানির শিকার। কোনো ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তিনি জড়িত নন। তিনি এক দিনের জন্যও পলাতক ছিলেন না। তিনি রোজ গানবাংলার অফিসে গেছেন। তাঁকে গানবাংলা অফিস থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
দুই পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত শমী কায়সার ও কৌশিক হোসেন তাপসকে তিন দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেয়।
রাজধানীর উত্তরা থেকে শমী কায়সারকে গ্রেফতারের কথা জানায় পুলিশ। বুধবার পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে তাঁকে উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের একটি বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শমী কায়সার আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ছিলেন। পাশাপাশি দেশের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন। এ পদ থেকে ১৪ অগাস্ট পদত্যাগ করেছেন তিনি।
শমী কায়সার শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সারের একমাত্র সন্তান।
অন্যদিকে রোববার দিবাগত রাতে কৌশিক হোসেন তাপসকে গ্রেফতারের কথা জানায় পুলিশ। সোমবার পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাঁকে রাজধানীর ভাটারা থানা এলাকার গানবাংলা চ্যানেল কার্যালয়ের সামনে থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন আদালতে আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, নেতা-কর্মী এবং সাংবাদিক ও সাহিত্যিকসহ শত শত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এর বেশির ভাগই খুনসংক্রান্ত। ব্যাপক হারে খুনের মামলা এবং তার ভিত্তিতে গ্রেফতার ও পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করা নিয়ে আইনজীবী ও সাংবাদিক মহল থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ময়নুল ইসলাম ১৬ সেপ্টেম্বর আশ্বাস দেন যে, প্রমাণ ছাড়া কাউকে গ্রেফতার করা হবে না