৯ দফা দাবি ঘোষণার মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার (৫ই নভেম্বর) ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ওলামা-মাশায়েখদের ইসলামিক সম্মেলন শেষ হলো।
এই নয় দফার মধ্যে ছিল ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরে হত্যাকাণ্ডের বিচার ও আলেমদের বিরুদ্ধে সব ধরনের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার।
৫ অগাস্ট ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বামপন্থী রাজনীতিক রাশেদ খান মেনন ও হাসানুল হক ইনুসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকার শাপলা চত্বরে হেফাজত ইসলামের সমাবেশে “নির্বিচারে গুলি চালিয়ে গণহত্যার” অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এই সম্মেলনে বাংলাদেশে কওমি মাদ্রাসা, তাবলিগ জামাত ও ইসলামকে রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বিশিষ্ট আলেম ও নেতারা।
এছাড়া টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে সাদ কান্ধলভির সমর্থকদের বিচার এবং তার বাংলাদেশে প্রবেশ নিষিদ্ধের দাবি জানান।
একই সাথে কাকরাইল মসজিদে সাদ সমর্থকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা এবং বাংলাদেশে কাদিয়ানিদের আনুষ্ঠানিকভাবে 'অমুসলিম' ঘোষণা করার দাবি জানায় তারা।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলনে যোগ দিতে আলেমসহ হাজার হাজার মানুষ জড়ো হতে থাকেন এবং ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি মানুষ উপস্থিত হয়।
২০১৩ সালের ৫ই মে কী ঘটেছিল
হেফাজতে ইসলাম ২০১৩ সালের ৫ মে ‘ঢাকা অবরোধ’ কর্মসূচি পালন করার পর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে সমাবেশ করার অনুমতি চায়। কর্তৃপক্ষ অনুমতি দেয়ার পর হাজার হাজার হেফাজত কর্মী ঢাকায় প্রবেশ করে, কিন্তু দুপুরের মধ্যে বঙ্গবন্ধু অ্যাভেনিউ, বাইতুল মোকাররাম, তোপখানা রোড ইত্যাদি এলাকায় হেফাজত কর্মী এবং পুলিশ আর আওয়ামী লীগ কর্মীদের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
গুলিবর্ষণ, ভাংচুর আর অগ্নিসংযোগের ফলে ঢাকার কেন্দ্রস্থল রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
তবে শাপলা চত্বর, যেখানে হেফাজত কর্মীরা বিকেলের মধ্যে সমবেত হয়, শান্তিপূর্ণ থাকে। সমাবেশে নেতারা তাদের অবস্থান চালিয়ে যাবার ঘোষণা দেয়ার পর সরকার হেফাজতকে রাত বারোটার মধ্যে শাপলা চত্বর ছেড়ে চলে যাবার নির্দেশ দেয়।
রাত বারোটার পর পরই পুরো এলাকায় বিদ্যুৎ বন্ধ রেখে পুলিশ এবং র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন কয়েক ঘণ্টার অভিযানে হেফাজত কর্মীদের একদিকে নারায়ণগঞ্জ, অন্যদিকে কমলাপুর স্টেশনের দিকে পাঠিয়ে দেয়। পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, তারা ফাঁকা গুলি এবং সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে।