বিডিআর হত্যাকাণ্ডের তদন্তে কমিশন গঠন করা হবে কি না, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে পুনঃতদন্ত অবশ্যই হবে এবং তা দ্রুত হবে, সোমবার (৪ঠা নভেম্বর) সাংবাদিকদের এই কথা বলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
বাংলাদেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। তবে খুব সন্তোষজনক পর্যায়ে পৌঁছাতে আরও সময় লাগবে।
সোমবার রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরের সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার এক মতবিনিময় সভা আয়োজিত হয়েছে।
মতবিনিময় সভায় বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীসহ বিজিবির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় গণমাধ্যমে এসেছে সভায় জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, "একটি সুশৃঙ্খল ও প্রশিক্ষিত বাহিনীর সদস্য হিসেবে বিজিবি সদস্যদের চেইন অব কমান্ড মেনে কাজ করতে হবে। তবে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বেআইনি আদেশ মানা যাবে না।"
গত ২০০৯ সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারি, তিন দিনব্যাপী 'বিডিআর সপ্তাহ' চলার সময়, পিলখানা সদর দপ্তরের দরবার হলে বাংলাদেশ রাইফেলস এর (বর্তমান বিজিবি) কয়েকশ সদস্য সশস্ত্র বিদ্রোহ করে। তারা ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যা করে।পরদিন ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন সরকার ও বিডিআর বিদ্রোহীদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে অস্ত্র, গোলাবারুদ ও গ্রেনেড জমা দেয়ার মধ্য দিয়ে বিদ্রোহের সমাপ্তি ঘটে। সেই ঘটনায় মোট ৫৮টি মামলা দায়ের হয়। এর মধ্যে একটি হত্যা ও লুটপাটের অভিযোগে, বাকিগুলো বিদ্রোহের অভিযোগে দায়ের করা হয়।
হত্যা মামলার বিচারে, ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৪২৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া, ২৭৭ জন অভিযুক্ত ব্যক্তি খালাস পান।
সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে ২৬২ জন বিদ্রোহীকে তিন মাস থেকে ১৯ বছর পর্যন্ত, বিভিন্ন মেয়াদে এবং প্রয়াত বিএনপি নেতা নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীসহ ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।
অন্যদিকে, বিদ্রোহের ৫৭টি মামলায় ৫ হাজার ৯২৬ জন বিডিআর জওয়ানকে চার মাস থেকে সাত বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়।