হারিকেন হেলেন ফ্লোরিডার একটি কম জনবহুল উপকূল অঞ্চলে তাণ্ডব চালিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মাপার একক অনুযায়ী এটির ক্যাটেগরি ৪। এই ঝড়ের রোষে বহু আবাসনের সাইডিং খুলে গেছে, ক্রমবর্ধমান প্লাবনে আটকে পড়েছেন অসংখ্য বাসিন্দা এবং কয়েক লক্ষ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কমপক্ষে ২১জন মারা গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
এই ঝড়ের ফলে বৃহস্পতিবার রাতে ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে এবং বিগ বেন্ড এলাকায় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘন্টায় ২২৫ কিলোমিটার। উল্লেখ্য, এই এলাকা ফ্লোরিডার প্যানহ্যান্ডেল ও উপদ্বীপের সংযোগস্থল। এখানে মৎস্যজীবীদের গ্রাম রয়েছে এবং অনেকে ছুটি কাটাতে আসেন।
স্থানীয় একটি সংবাদ সংস্থা দেখিয়েছে, একটি বাড়ি উল্টে গেছে। এই জনপদ ও পার্শ্ববর্তী টেলর কাউন্টির বেশিরভাগ অংশই বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন ছিল।
পেরির প্রায় ১৯৩ কিলোমিটার দক্ষিণে সাইট্রাস কাউন্টিতে বন্যার ফলে আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধার করতে উদ্ধারকারীরা শুক্রবার ভোরে নৌকা নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন।
শেরিফের দফতর এক ফেসবুক পোস্টে সতর্ক করেছে, “আপনি যদি আটকে পড়ে থাকেন এবং সাহায্যের দরকার হয় তাহলে অনুগ্রহ করে উদ্ধারকারীদের কল করুন—নিজে বন্যার জল ঠেলে পেরনোর চেষ্টা করবেন না।” কর্তৃপক্ষ বলেছে, এই জলে বৈদ্যুতিন তার, নোংরা আবর্জনা, ধারালো জিনিস ও অন্যান্য ধ্বংসাবশেষ থাকতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকায় ৩০ লক্ষের বেশি মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছেন।
ফ্লোরিডায় একটি গাড়ির উপর স্তম্ভ আছড়ে পড়ায় এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। দক্ষিণ জর্জিয়ায় সম্ভবত ঘূর্ণিঝড়ের গতিমুখে পড়ে দুই ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানা গেছে। নর্থ ক্যারোলাইনার শার্লটে একটি বাড়ির উপর গাছ ভেঙে পড়ায় আরও এক ব্যক্তি মারা গেছে।
ফ্লোরিডার গালফ কোস্টে অসিলিয়া নদীর মুখের কাছে উপকূলে হারিকেন আছড়ে পড়েছে। গত বছর হারিকেন ইদালিয়া যে উপকূলে আঘাত হেনেছিল সেই জায়গা থেকে এই জায়গাটি প্রায় ৩২ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। হারিকেন ইদালিয়া প্রায় একই রকম ক্ষিপ্রতা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছিল।
ফ্লোরিডা কাছে জর্জিয়ার ভালদোস্তার (এখানে প্রায় ৫৫ হাজার মানুষের বাস) পাশ দিয়ে শুক্রবার ভোরে হারিকেনের কেন্দ্রবিন্দু অগ্রসর হওয়ার সময় কয়েক ডজন মানুষ অন্ধকার বারান্দায় আতঙ্কে জড়সড় ও ঠাসাঠাসি অবস্থায় ছিলেন।
বিদ্যুৎ নেই। শুধুমাত্র হলঘরের জরুরিকালীন বাতি, ফ্ল্যাশলাইট ও সেলফোন দিয়ে সামান্য আলোর ব্যবস্থা করা গেছে। খাবার ঘরের বাতির জায়গা থেকে পানি চুঁইয়ে পড়েছে এবং ছাদের ধ্বংসাবশেষ বাড়ির বাইরে আছড়ে পড়েছে।