অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

শিক্ষানবিস চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার বিরুদ্ধে সমাবেশ:ভারতে পুলিশের জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ


 কোলকাতায় এ মাসের গোড়ার দিকে একজন শিক্ষানবিস চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে সমবেত বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ছে। ২৭ আগস্ট,২০২৪।
কোলকাতায় এ মাসের গোড়ার দিকে একজন শিক্ষানবিস চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে সমবেত বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ছে। ২৭ আগস্ট,২০২৪।

ভারতের পূর্বাঞ্চলে নির্বাচিত একজন শীর্ষ কর্মকর্তার পদত্যাগের দাবিতে সমবেত হাজার হাজার বিক্ষোভকারিকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে। বিক্ষোভকারিরা তাঁকে এই বলে অভিযুক্ত করছেন যে এ মাসের গোড়ার দিকে একজন শিক্ষানবিস চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার তদন্ত সঠিক ভাবে না হওয়ার জন্য তিনি দায়ী।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কোলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটালে দায়িত্বরত ৩১ বছর বয়সী চিকিৎসককে ৯ই আগস্ট হত্যা করায় গোটা ভারতে প্রতিবাদ দেখা দেয়। এতে সে দেশে নারীদের বিরুদ্ধে নিত্যদিনের সহিংসতার উপর আলোকপাত করা হয়।

বিক্ষোভকারীরা বলছেন এই আক্রমণ ভারতজুড়ে হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরিচর্যা কর্মীদের অসহায়ত্বকেই তুলে ধরছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল ভারতীয় জনতা পার্টির বিক্ষোভকারীরা পুলিশের কর্ডন ভেদ করে মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের দপ্তরের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে এবং তাঁর পদত্যাগ দাবি করে। মমতা বন্দোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস পার্টি এখন পশ্চিম বঙ্গের ক্ষমতাসীন দল।

মোদীর দল হচ্ছে পশ্চিম বঙ্গে প্রধান বিরোধী দল । পুলিশ তাদের সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে এবং রাস্তায় প্রতিবন্ধক স্থাপন করেছে।

শিক্ষানবিস চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে সক্রিয়বাদীরা শ্লোগান দিচ্ছেন। কলকাতা , ভারত। ২৭ আগস্ট,২০২৪। (এপি'র ছবি/ বিকাশ দাস)
শিক্ষানবিস চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে সক্রিয়বাদীরা শ্লোগান দিচ্ছেন। কলকাতা , ভারত। ২৭ আগস্ট,২০২৪। (এপি'র ছবি/ বিকাশ দাস)

পুলিশ লাঠি চার্জ করে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিয়েছে এবং কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ছুঁড়েছে। সমাবেশের আগেই চারজন সক্রিয়বাদী শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয় । পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে যে তারা বড় ধরণের সহিংসতার পরিকল্পনা করছিল।

কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য পরিচর্যা কর্মীদের নিরাপত্তার জন্য ভারতের শীর্ষ আদালত চিকিৎসকদের একটি জাতীয় টাস্ক ফোর্স গঠন করে। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে এই প্যানেল গোটা দেশে স্বাস্থ্য পরিচর্যা কর্মী ও স্বাস্থ্য বিষয়ক পেশাজীবিদের সুরক্ষার জন্য নির্দেশাবলী তৈরি করবে।

নিহত এই চিকিৎসকের অটোপসীতে এটা নিশ্চিত করা গেছে যে তিনি যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন এবং এই অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে একজন সেচ্ছাসেবক পুলিশকে আটক করা হয়। ভুক্তভোগীর পরিবার অভিযোগ করেছে যে এটি ছিল দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা এবং এতে আরও কিছু লোক যুক্ত ছিল।

সেই থেকে গোটা দেশে ক্ষোভ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হচ্ছে । এই বিক্ষোভের সময়ে হাজার হাজার চিকিৎসক ও প্যারামেডিক গোটা ভারতে সরকারি হাসপাতালগুলো থেকে বেরিয়ে এসেছেন এবং কাজের পরিবেশে নিরাপত্তার দাবি করছেন। হাসপাতালগুলো থেকে তাদের বেরিয়ে আসায় গোটা ভারতে হাজার হাজার রোগি অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছেন।

২০১২ সালে দিল্লিতে একটি চলন্ত বাসে ২৩ বছর বয়সী এক ছাত্রীকে দলবদ্ধ ভাবে ধর্ষণ করে হত্যার ঘটনার পর কঠোর আইন প্রয়োগ সত্ত্বেও, ভারতে নারীরা ক্রমবর্ধমান সহিংসতার শিকার হচ্ছেন।

এই আক্রমণ এ ধরণের অপরাধগুলির জন্য আরও কঠোর শাস্তি দিতে আইন প্রণেতাদের উদ্বুদ্ধ করেছে এবং ধর্ষণের দ্রুত বিচার ব্যবস্থা স্থাপন করা হয়েছে। যারা একই অপরাধের পুণরাবৃত্তি করেছে সরকার তাদের জন্য আরও কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করেছে।

XS
SM
MD
LG