প্রায় এক দশক পর আবার পুলিশের নিরাপত্তা পেতে যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব জাহাঙ্গীর আলম এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, খালেদা জিয়াকে পুলিশের নিরাপত্তা সহায়তা দেয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আদেশ জারি করেছে। ২০১৫ সালে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার পদ হারানোর পর, তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার তাকে পুলিশের নিরাপত্তা সহায়তা প্রত্যাহার করে নেয়।
গত ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের নির্দেশে খালেদা জিয়াকে পুরোপুরি মুক্তি দেয়া হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ৬ আগস্ট জারি করা এক গেজেটে বলা হয়, বাংলাদেশ সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদের আওতায় রাষ্ট্রপতি এ আদেশ দেন।
সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যে কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের দেয়া যেকোনো দণ্ডের মার্জনা, বিলম্বন ও বিরাম মঞ্জুর করার এবং যেকোনো দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকবে।”
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫। পরে তাকে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়। ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট তার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করে।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে সরকার ২০২০ সালের ২৫ মার্চ এক নির্বাহী আদেশে, খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে ৭৭৬ দিন পর তাকে সাময়িকভাবে মুক্তি দেয়। তবে তাকে শর্ত দেয়া হয় যে তিনি গুলশানের বাসায় থাকবেন এবং দেশত্যাগ করতে পারবেন না।
৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস এবং কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যা-সহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।
২০২০ সালে শর্তসাপেক্ষে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ডের অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তাকে অনেকবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে।
২০২১ সালের নভেম্বরে খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে তার চিকিৎসকরা তাকে বিদেশে পাঠানোর পরামর্শ দিয়ে আসছেন। গত বছরের ২৬ অক্টোবর খালেদা জিয়ার পেট ও বুকে পানি জমে যাওয়া ও লিভারে রক্তক্ষরণ বন্ধ করার জন্য, টিপস প্রসিডিউর নামে পরিচিত হেপাটিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন যুক্তরাষ্ট্রের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।