রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একজন সিনিয়র ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি ইরানের প্রেসিডেন্ট ও শীর্ষ কর্মকর্তাসহ সে দেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য সোমবার তেহরানে পৌঁছান, যখন এই ইসলামি প্রজাতন্ত্র হামাস নেতাকে হত্যার পাল্টা জবাব দেওয়ার তোড়জোড় শুরু করেছে।
গত সপ্তাহে ইরানে ফিলিস্তিনি ইসলামি গোষ্ঠী হামাসের নেতা ইসমাইল হানিয়েকে হত্যার নিন্দা করেছে রাশিয়া এবং সকল পক্ষকে এমন কোনও পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে, যা মধ্যপ্রাচ্যকে বৃহত্তর আঞ্চলিক যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
রাশিয়ার ভেজদা টেলিভিশন কেন্দ্র দেখিয়েছে, সে দেশের নিরাপত্তা পরিষদের সচিব সেরগে শোইগু ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর-এর (আইআরজিসি) সিনিয়র কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল আলি আকবর আহমদিয়ার সঙ্গে বৈঠক করছেন। ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল নিরাপত্তা পরিষদের সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আহমদিয়া।
চলতি বছরের মে মাসে রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদে দায়িত্ব পাওয়ার আগে সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা শোইগু ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন।
ভেজদা টিভির বক্তব্য অনুযায়ী, “তেহরানে, ইরানের প্রেসিডেন্ট, সুপ্রিম ন্যাশনাল নিরাপত্তা পরিষদের সচিব ও জেনারেল স্টাফের প্রধানের সঙ্গে আলোচনা করার কথা রয়েছে রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের সেক্রেটারির।”
হানিয়ের হত্যা এবং ইসরায়েল
মধ্যপ্রাচ্যে সাম্প্রতিক অস্থিরতা বৃদ্ধি নিয়ে পুতিন যদিও প্রকাশ্যে এখনও কোনও মন্তব্য করেননি, তবে সিনিয়র রুশ কর্মকর্তারা বলেছেন, হানিয়ের হত্যার পিছনে যারা রয়েছে তারা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির আশাকে নষ্ট করতে ও যুক্তরাষ্ট্রকে সামরিক পদক্ষেপে টানতে চাইছে।
ইরান ইসরায়েলকে দায়ী করে বলেছে, তারা এই দেশকে “শাস্তি” দেবে; ইসরায়েলি কর্মকর্তারা এই হত্যার দায় স্বীকার করেননি। ইরান লেবাননের গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ এবং হামাসকে সমর্থন করে। হামাস গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে এবং হিজবুল্লাহের সিনিয়র সামরিক কমান্ডার ফুয়াদ শুকর গত সপ্তাহে বৈরুতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়।
ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের শুরু থেকে রাশিয়া ইরানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে এবং জানিয়েছে, ইসলামিক রাষ্ট্রের সঙ্গে তারা বিবিধ বিষয়ে সহযোগিতামূলক চুক্তিতে স্বাক্ষর করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার দৈনিক ব্রিফিং-এ বলেছেন, “৭ অক্টোবর থেকে এই সংঘাতে তাদের কোনও গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে আমরা দেখিনি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারা অনুপস্থিত থেকেছে। সংঘাত কমাতে পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে কোনও পক্ষকে অনুরোধ করার ক্ষেত্রে তাদের আমরা নিশ্চিতভাবেই কিছু করতে দেখিনি।”
মিলার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র জানে না, ঠিক এখনই কেন শোইগু সফর করছেন, তবে একটা সম্ভাবনা এমন হতে পারে, ইউক্রেন আক্রমণে ইরানের সমর্থন চাইতে তেহরানের সঙ্গে মস্কোর সম্পর্ক বাড়ানোর লক্ষ্যেই এই সফর।