অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

কমালা হ্যারিসের জাতিগত পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ট্রাম্প


যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প (বামে) ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্ল্যাক জার্নালিস্টের সম্মেলনে এক প্যানেলে বক্তব্য রাখছেন। তার সামনে এবিসি নিউজের রেচেল হ্যারিস। শিকাগো, ইলিনয়স। ফটোঃ ৩১ জুলাই, ২০২৪।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প (বামে) ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্ল্যাক জার্নালিস্টের সম্মেলনে এক প্যানেলে বক্তব্য রাখছেন। তার সামনে এবিসি নিউজের রেচেল হ্যারিস। শিকাগো, ইলিনয়স। ফটোঃ ৩১ জুলাই, ২০২৪।

ডনাল্ড ট্রাম্প শিকাগোতে ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্ল্যাক জার্নালিস্টের অনুষ্ঠানে হাজির হওয়ার আগে কমালা হ্যারিসের জাতি-পরিচয় নিয়ে মিথ্যা প্রশ্ন তোলেন। এ নিয়ে বুধবার দ্রুত বিরোধিতার ঝড় বয়ে যায়।

রিপাবলিকান সাবেক প্রেসিডেন্ট তথা প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ট্রাম্প দাবি করেন, অতীতে হ্যারিস শুধুমাত্র তার ভারতীয় হেরিটেজের প্রচার করেছেন। উল্লেখ্য, হ্যারিসই যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী ও এশীয় আমেরিকান ভাইস প্রেসিডেন্ট।

এই গোষ্ঠীর বার্ষিক সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার সময় ট্রাম্প বলেন, “কয়েক বছর আগে তার (হ্যারিস) কৃষ্ণাঙ্গে রূপান্তরিত হওয়ার আগে পর্যন্ত আমি জানতাম না যে, তিনি কৃষ্ণাঙ্গ এবং এখন তিনি কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে পরিচিত হতে চাইছেন। তাই, আমি জানি না, তিনি ভারতীয় নাকি কৃষ্ণাঙ্গ?”

হ্যারিস হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক স্তরে পড়াশোনা করেছেন। এই বিশ্ববিদ্যালয় যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহাসিকভাবে নাম করা ‘ব্ল্যাক’ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলির অন্যতম। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঐতিহাসিকভাবে কৃষ্ণাঙ্গ নারী সমিতি ‘আলফা কাপ্পা আলফা’তে তিনি যুক্ত ছিলেন। সিনেটর হিসেবে হ্যারিস কংগ্রেসের কৃষ্ণাঙ্গ ককাসের সদস্য ছিলেন।

ট্রাম্প বারবার তার প্রতিদ্বন্দ্বিকে জাতপাতের ভিত্তিতে আক্রমণ ও সমালোচনা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সম্পর্কে মিথ্যা তত্ত্ব প্রচার করে ট্রাম্পের রিপাবলিকান রাজনীতিতে উত্থান হয়েছিল। কী সেই অপপ্রচার? তিনি দাবি করেছিলেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার জন্ম যুক্তরাষ্ট্রে হয়নি।

চলতি বছরের রিপাবলিকান প্রাইমারিতে এক পর্যায়ে তিনি জাতিসংঘের সাবেক দূত নিকি হ্যালিকে (যিনি ভারতীয় অভিবাসীর মেয়ে) “নিম্বরা” বলে অভিহিত করেছিলেন।

ওই সংগঠনের বার্ষিক সম্মেলনে এবিসি নিউজের সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী রেচেল স্কটের সঙ্গে সাবেক প্রেসিডেন্ট বিতণ্ডা ও বচসায় জড়িয়ে পড়েন এবং তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন যে, তিনি তার সম্পর্কে “খুব অভদ্র ভূমিকা” দিয়েছেন। ট্রাম্পের আরও অভিযোগ, কৃষ্ণাঙ্গ মানুষ, কৃষ্ণাঙ্গ সাংবাদিকদের নিয়ে অতীতে তার সমালোচনা, কৃষ্ণাঙ্গ প্রসিকিউটরদের আক্রমণ এবং তার ফ্লোরিডার ক্লাবে শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদীদের সঙ্গে তার নৈশভোজ নিয়ে প্রথমেই কঠিন প্রশ্ন করেছেন র‍্যাচেল।

এই রিপাবলিকান তার মিথ্যা দাবির পুনরাবৃত্তি করেছেন যে সে দেশে অবৈধভাবে আসা অভিবাসীরা “কৃষ্ণাঙ্গদের কাজগুলি নিয়ে নিচ্ছে।” স্কট যখন চাপ দেন যে, “কৃষ্ণাঙ্গদের কাজ” বলতে তিনি কী বোঝাতে চাইছেন, তখন ট্রাম্প উত্তরে বলেন, “যে-কোনও কাজ।”

এই সংগঠনে বক্তব্য রাখার জন্য সাবেক প্রেসিডেন্টকে আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে এনএবিজে-র মধ্যে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে যা অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে। কৃষ্ণাঙ্গ সাংবাদিকদের এই সংগঠন সাধারণত নির্বাচনের বছরে তাদের গ্রীষ্মকালীন সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীদের বক্তব্য রাখার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে থাকে।

তবে, ট্রাম্প এনএবিজে-র আমন্ত্রণ গ্রহণ করায় এই সংগঠনের অন্তত একজন উচ্চ পর্যায়ের সদস্য পদত্যাগ করেছেন।

কৃষ্ণাঙ্গ নারী সাংবাদিকদের প্রতি ট্রাম্পের দুর্ব্যবহারের জন্য এনএবিজে ও তার একটা অস্বস্তিকর ইতিহাস রয়েছে। ২০১৮ সালে কৃষ্ণাঙ্গ নারী সাংবাদিকদের বিষয়ে বলতে গিয়ে ট্রাম্প বারবার স্টুপিড,” “লুজার” ও "ন্যাস্টির" মতো শব্দ ব্যবহার করায় এনএবিজে তাকে নিন্দা করেছিল। এই নারী সাংবাদিকদের মধ্যে ছিলেন এনবিসি নিউজের ইয়ামিশে আলসিন্দর, সিএনএনের অ্যাবি ফিলিপ ও দ্য গ্রিও-র এপ্রিল রায়ান।

XS
SM
MD
LG